
আপনাকে উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচয় দিতে কার না ভালো লাগে! বর্তমান সময়ের সবচেয়ে চাহিদার কিংবা আকর্ষণের একটি কাজ হচ্ছে নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। আপনি যাই করেন না কেনব্যবসা কিংবা চাকরি যেকোনো জায়গাতেই মানুষ চায় নিজেকে কিছুটা আলাদাভাবে উপস্থাপন করতে।তাই তো বর্তমান সময়ের তরুণ তরুণীদের আকর্ষণের একটি জায়গা হচ্ছে নিজেকে উদ্যোক্তার আসনে দেখা।
যদি আপনি উদ্যোক্তা হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার চিন্তা করে থাকেন তবে আপনি এই পোস্টের শেষ পর্যন্ত পড়বেন । আমি আপনাদের কে সাহায্য করবো কিভাবে আপনি একজন সফল উদ্যোক্তা হতে পারেন ।
একজন সফল উদ্যোক্তার যে বিশেষ গুনাবলি গুলো থাকে। তা হলো:
1. নিজেকে বিশ্বাস করুন
2. লক্ষ্য স্থির করুন
3. অনলাইন ও অফলাইন নেটওয়ার্ক তৈরি করা
4. এ্যাডভারটাইজিং করা
5. নতুন কিছু উদ্ভাবন করা ।
6. কঠোর পরিশ্রমী হতে হবে
7. আত্মবিশ্বাস
8. উদ্দেশ্য থাকতে হবে
9. মনে মনে দৃশ্যকল্প অংকন
10. ধৈর্যশীল থাকা
11. কোন কাজেই ‘না’ বলা যাবে না
12. মূলধন সংগ্রহ করা
নিজেকে বিশ্বাস করুন:
কোন কাজ শুরু করার আগে যে বিষয় টি বেশি গুরুত্বর্পুণ তা হলো নিজের উপর আস্হা বা বিশ্বাস । আপনি যদি নিজেকে বিশ্বাস করতে পারেন তবে কোন কঠিন কাজ আপনি সফল হবেনই ।
লক্ষ্য স্থির করা

প্রতি মানুষের জীবনে সবচেয়ে কঠিন কাজ হচ্ছে তার ভবিষৎ লক্ষ্য স্থির করা। আপনি যখন কোনো কাজ মন প্রাণ দিয়ে করতে চাইবেন তখন দেখবেন নানা ভাবে নানা সমস্যা মাথাচারা দিয়ে উঠছে। আপনার হয়ে যাওয়া কাজটাও শেষ মূহূর্তে আর করা হয়ে উঠছে না। এই পর্যায়ে বেশিরভাগ নতুন উদ্যোক্তাদের মনে এটাই আসে যে আমাকে দিয়ে আর হবে না।
আমি এই কাজটি শেষ করতে পারবো না। এটি আপনার মনোবল ভেঙ্গে দেয় যাতে করে আপনি আর আপনার লক্ষ্য পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেন না। তাই সবার আগে লক্ষ্য স্থির করুন। যাতে করে আপনি কাজ শুরু করে পিছ পা না হন। যে কোন সমস্যা মোকবেলা করতে পারেন।
অনলাইন ও অফলাইন নেটওয়ার্ক তৈরি করা
একজন নতুন উদ্যোক্তা হিসেবে আপনি অনেক কিছুই জানেন না। সেই দিক থেকে আপনি নতুন কিছু করতে গেলে আপনাকে নানা সমস্যার মুখে পড়তে হবে। তাই যত পারুন আপনার আশেপাশের মানুষের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করুন। এটি আপনাকে নানা তথ্য দিয়ে সাহায্য করবে। সেই সাথে আপনার জন্য এই যোগাযোগ আপনার জন্য কাজ করবে নেটয়ার্ক হিসেবে।
তখন আপনি কোন কাজ করলে কাজের তথ্য খুবিই সহজে তা মানুষের কাজে পৌছে দিতে পারবেন । আপনার ভাল নেটয়ার্ক এর মাধ্যমে । তাই ব্যাবসার জন্য নেটয়ার্ক একটি বড় মাধ্যম এটি আপনার অনলাইন ও অফলাইন দুটি জায়গাতে দরকারী ।
এ্যাডভারটাইজিং
আপনার কাজকে যত সুন্দর করে মানুষের মাঝে তুলে ধরবেন আপনি তার কদর ততো বেশি পাবেন । আর সেই ক্ষেত্রে মোবাইল এ্যাডভারটাইজিং হতে পারে আপনার প্রথম স্টেপ। সেজন্য আপনার আশেপাশের বন্ধু কিংবা আত্নীয়দের নির্বাচন করুন।
এরপর তাদের আপনার কাজ থেকে মেইল কিংবা নানাভাবে আপনার কাজের বিঙ্গাপন প্রদর্শন করুন। যখন দেখবেন সাড়া পাচ্ছেন, তখন বড় ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারেন। আগে নিবেন না । আগে কাজটি শিখে নিন তারপর এগিয়ে চলুন ।
নতুন কিছু উদ্ভাবন করা :
আপনি একজন উদ্যোক্তা। আপনার কাজই হচ্ছে নতুন নতুন জিনিস আবিষ্কার করা। নতুনকে সবার মাঝে তুলে ধরা। পিছনে হাজার মানুষ হাজারটা কথা বলবেই। তাকে নিয়ে বসে থাকলে আপনি কখনো সফল উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারবেন না।
তাই সব সময় নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন। অন্যের কথায় খেয়াল দেবেন না ।
কঠোর পরিশ্রমী:
কোন কাজ করতে গেলে আপনাকে অবশ্যই কাজের প্রতি ভালবাসা ও আস্হা রাখতে হবে। উদ্যোক্তা হতে হলে কঠোর পরিশ্রমী হতে হবে। তিল তিল করে গড়ে তোলা বিজনেস এক সময় বিশাল শিল্প সামাজ্য করে সাজাতে সততা আর পরিশ্রমের বিকল্প নেই।
উদ্যোক্তা হতে আপনাকে পিওন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় প্রধানের সঙ্গে পর্যন্ত কথা বলতে হবে। অধিক পরিশ্রম করার মানসিকতা থাকতে হবে। কোনো কারণে কাজে সফল না হতে পারলে হাল ছেড়ে দিলে চলবে না। অধিক মনোবল নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
আত্মবিশ্বাস :
আমাদের প্রত্যেক মানুষের কিছু গুণ থাকে। সফল উদ্যোক্তার প্রধান গুণ হচ্ছে আত্মবিশ্বাস। যার আত্মবিশ্বাস যত বেশি তার সাফল্য তত বেশি। যদিও এটি অর্জন করা কঠিন। সফল উদ্যোক্তা তার আশপাশের আত্মবিশ্বাসী লোকদের মধ্যে অন্যতম।
আপনাকে হতে হবে স্থির ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন, যা আত্মবিশ্বাসকে আরও বৃদ্ধি করে সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেবে। আপনার যদি আত্মবিশ্বাস কম থাকে তাহলে আপনি এক সফল উদ্যোক্তা হতে পারবেন না ।
উদ্দেশ্য :
আপনি যে কাজটি করেন না কেন সব কাজেই একটা উদ্দেশ্য থাকে, উদ্দেশ্যবিহীন কোন কাজ ভালো কিছু বয়ে আনতে পারে না। বিশ্বাস করতে হবে আপনি ব্যতিক্রমী কিছু করতে সক্ষম। তাহলে পারবেন ।
মনে মনে ব্যবসার দৃশ্যকল্প অংকন:
মনে মনে আপনি আপনার ব্যবসার দৃশ্যকল্প আঁকুন। কীভাবে সবকিছু পরিচালিত হচ্ছে দেখুন। সেখানে নানা রকম দৃশ্যপট উপস্থাপিত হবে। সবকিছু সুচারুভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করুন। একজন সফল উদ্যোক্তা তার বাস্তব জীবনে দৃশ্যপটের যথাযথ প্রয়োগে সফলতা অর্জনে সক্ষম হন।
ধৈর্যশীলতা :
সফল উদ্যোক্তারার আর একটি ভালগুন হলো কঠোর ধৈর্যশীলতার মাধ্যমে ব্যবসার পথকে অধিকতর মসৃণ করতে হবে। ব্যবসায় সফলতার পাশাপাশি ব্যর্থতা নামক শব্দটি থাকে। ব্যর্থতা নামক শব্দটিতে ধৈর্যশীলতার মাধ্যমে মোকাবেলা করতে হবে।
কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে ব্যবসার সুদীর্য পথ অতিক্রম করে সফল উদ্যোক্তা হতে অবশ্যই ধৈর্যশীলতার পরিচয় দিতে হবে।ধৈর্য নিয়ে কোন কাজ করলে আপনি সফল হবেন । এটা কেও ঠেকাতে পারবে না।
কখনোই ‘না’ বলা যাবে না :
সফল উদ্যোক্তারা জানেন যে তাদের পক্ষে কী করা সম্ভব এবং কী করা সম্ভব নয়। তাই অন্যরা যখন কাজের ভয়ে না বলেন বা পারবেন না বলে কাজ পাওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করেন সফল ব্যক্তিরা তাদের সবকিছু বিবেচনা করেই সুযোগকে হ্যাঁ বলেন। এর ফলে ক্লায়েন্টদের কাছে অন্য সবার থেকে সফল ব্যবসায়ী হয়ে ওঠেন আলাদা।
অনেক সময় ক্লায়েন্টরা অন্য কাউকে না খুঁজে সরাসরি সফল ব্যবসায়ীদের আর কাজ করার এবং আরও আয় করার সুযোগ দিয়ে থাকেন। কোন কাজ শুরু করার আগেই আপনি যদি না পারবো না কথাটি বলেন ।তবে আপনার কাজের প্রতি আগ্রহ নস্ট হয়ে যাবে । তাই চেস্টা করবেন কোন কাজে যেন আপনাকে না বলতে হয় ।
মূলধন :
সর্বোপরি উদ্যোগের শুরুতেই নিশ্চিত করতে হবে প্রয়োজনীয় মূলধন। বিশেষ করে প্রথম বছরের সব খরচ এবং বিনিয়োগের পুরো টাকাই থাকা চাই আপনার হাতে। তা না হলে আপনার ব্যাবসায়ের অনেক সমস্যা হতে পারে । তাই এটির দিকে খেয়াল রাখবেন ।পরের বছরগুলোর জন্য হয়তো তারল্য নির্ধারণ করে আপনি ব্যবসার আয় থেকেই সব খরচ নির্বাহ করতে পারবেন।
এছাড়া বাংলাদেশের অনেক সরকারি, বেসরকারি ব্যাংক, এনজিও তৈরি আছে আপনাকে সাহায্যের জন্য। সুতরাং বুঝতে পারছেন । একজন ভাল ও সফল উদ্যোক্তা হতে হলে আপনাকে অবশ্যই উপরের প্রায় সকল গুনাগুন থাকতে হবে। তবেই আপনি আপনার লক্ষ্যে পেীছাতে পারবেন ।