Google AdSense অনুমোদন না হওয়ার প্রধান ১০ টি কারন

Google Adsense পাওয়ার আবেদন করার পর Reject হওয়ার কারন

.

Google Adsense সর্বপ্রথম ২০০৩ সালের জুন মাসে অফিসিয়ালভাবে চালু করার পর হতে প্রথম ৩-৪ বৎসর যদিও অনুমোদন করা খুব

সহজ একটা ব্যাপার ছিল কিন্তু এর পর থেকে যত দিন যাচ্ছে বিষয়টি তত কঠিন হয়ে দাড়াচ্ছে। শুরুর দিকে যে কেউ যেন-তেন কপি করা

একটি ব্লগ দিয়েও অনুমোদন করে নিতে পারলেও বর্তমানে একটি ভালমানের ব্লগেও বিভিন্ন নিয়ম সঠিকভাবে না মানার কারনে অনুমোদন

করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে যারা পূর্ণাঙ্গভাবে Google Adsense এর সকল নিয়ম মেনে ব্লগিং করছে তারা খুব সহজে অনুমোদন করতে

সক্ষম হচ্ছে।

বর্তমান সময়ের অনেক ভালমানের ব্লগার আছেন যারা বার বার Google Adsense এর জন্য আবেদন করে অনুমোদন করতে না পেরে

হতাশ হচ্ছেন। কিছু লোক চেষ্টা করে ব্যর্থ হচ্ছে আবার অনেকে কিছুতেই ব্যর্থতাকে মেনে নিতে পারছেন না। যারা বার বার আবেদন করে

ও Adsense পাচ্ছে না তাদের জন্য ১০ টি প্রধান কারণ শেয়ার করতে যাচ্ছি। এ গুলি নিশ্চয় আপনার ব্লগের ভূলগুলিকে সংশোধন করতে

সাহায্য করবে। এবং এগুলো ফলো করে চললে আমার বিশ্বাস আপনি গুগল এ্যাডসেন্স পাবেন।

.

১. ব্লগের বয়স কম হওয়ার কারন:-

Google AdSense এ আবেদন করার পূর্বে আপনার ব্লগের/ওয়েবসাইটের বয়স কমপক্ষে ৬ মাস হতে হবে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

বিশেষ করে এশিয়া মহাদেশের কোন জায়গা থেকে আবেদন করার জন্য ব্লগের বয়স ৬ মাস পূর্ণ না হওয়া অবধি আবেদন করাই সম্ভব

হয় না। কাজেই ব্লগের বয়স ৬ মাস পূর্ণ হওয়ার পরে Adsense এর জন্য আবেদন করা উচিত। তাহলে আপনি পেতে পারেন।

.

০২. পর্যাপ্ত কনটেন্ট না হলে:-

একটি ব্লগ পরিচালনা করার জন্য কনটেন্ট হচ্ছে তার প্রাণ। আপনার ব্লগে যত ভালমানের Content থাকবে তত বেশী ভিজিটর পাবেন।

Google AdSense এ আবেদন করার পূর্বে আপনার ব্লগে কমপক্ষে ২০/২৫ টি ভালমানের ইউনিক পোষ্ট থাকতে হবে।

ব্লগের প্রত্যেকটি Categories এ কমপক্ষে ৫ টি করে পোষ্ট হতে হবে। কারণ Adsense কর্তৃপক্ষ আপনার ব্লগটিকে অনুমোদন করা পূর্বে

ভালভাবে যাচাই করে দেখবে ব্লগের পর্যাপ্ত পরিমানে কনটেন্ট আছে কি না। যদি থাকে তবে আমার ধারনা আপনার কোন সমস্যা হবে না।

.

০৩. Poor Quality কনটেন্ট থাকলে চলবে না:-

ব্লগে শুধুমাত্র পর্যাপ্ত কনটেন্ট থাকলেই হবে না, পোষ্টগুলি অবশ্যই ভালমানের হতে হবে। আপনি যেন-তেন কিছু লেখা ব্লগে ছাপিয়ে রেখেই

পর্যাপ্ত কনটেন্ট রয়েছে মনে করে Adsense পাওয়ার জন্য আবেদন করলে কিছুতেই অনুমোদন হবে না। আপনি যদি ব্লগিং ‍শুরু করার

পূর্বে মনে করে থাকেন যে, ভবিষ্যতে আপনার ব্লগে গুগল এ্যাডসেন্স ব্যবহার করে অনলাইন হতে আয় করবেন,

তাহলে অবশ্যই এমন বিষয় নিয়ে লিখা শুরু করবেন যার মূল্য সার্চ ইঞ্জিনসহ সকল ধরনের পাঠকের কাছে রয়েছে। আপনার ব্লগে যখন

ভাল মানের কনটেন্ট থাকবে তখন ব্লগটি সবার কাছে গ্রহনযোগ্য হবে। যার ফলে গুগল এ্যাডসেন্স পাওয়ার পথ সুগম হবে। তাই এ দিক

থেকে একটু সাবধান থাকবেন।

.

০৪. ইউনিক কনটেন্ট হতে হবে:-

এটি ব্লগিং এবং গুগল এ্যাডসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে কমন ও গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এই বিষয়টির ভীতরের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য

কেউই ভালভাবে বুঝতে চান না বা বুঝতে সক্ষম হন না। অনেকের কাছে বিষয়টি পরিষ্কার হয় না যে, আসলে ইউনিক কনটেন্ট বলতে

কি? বেশীরভাগ লোকই মনেকরে কারও ব্লগ থেকে কপি করা কনটেন্ট ব্যবহার না করলেই সেটি ইউনিক কনটেন্ট হয়। মূলত বিষয়টির

পরিপূর্ণ অর্থ এ ভাবে হচ্ছে না।

তবে হ্যাঁ, অবশ্যই আপনার ব্লগের প্রত্যেকটি পোষ্ট অন্যের ব্লগ থেকে কপি করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ইউনিক কনটেন্ট বলতে সেটাকে

বুঝাবে, যেটির বিষয়বস্তু অন্য কারও সাথে কোনভাবেই মিলছে না। এখন আপনি হয়ত বলবেন আমি যেহেতু কারও কোন কনটেন্ট কপি

করিনি তাহলে কথা এটাই হচ্ছে ইউনিক কনটেন্ট। আপনি চেষ্টা করবেন আপনার কনটেন্ট যেন ইউনিক কনটেন্ট হয়।

.

৫. অনুপযুক্ত কনটেন্ট ব্যবহার করা:-

কিছু কনটেন্ট রয়েছে যেগুলি ব্যবহার করা Blogger Policy এর বাহিরে। যেগুলি ব্যবহার করলে সাধারণ মানুষের ক্ষতি হতে পারে। এ

ধরনের কনটেন্ট ব্যবহার করে যত ট্রাফিকই পান না কেন ব্লগের Adsense অনুমোদন হবে না। নিচে দেখুন-

  • পর্ণগ্রাফি/Adult কনটেন্ট।
  • হ্যাকিং বা ক্রাকিং টিপস।
  • থার্ড পার্টি ভিডিও শেয়ারিং ব্লগ।
  • বিভিন্ন মাদক জাতীয় দ্রব্যের প্রচার বা প্রসার।
  • Alcohol দ্রব্যের প্রতি আকৃষ্ট করা।
  • পরস্পর বিরোধী কনটেন্ট।
  • মারাত্মক অস্ত্রের বিজ্ঞাপন।

.

০৬. পর্যাপ্ত ট্রাফিক না থাকার কারন:-

আপনার ব্লগে যদি পর্যাপ্ত ট্রাফিক না থাকে তাহলে কোনভাবেই Google Adsense অনুমোদন হবে না। ব্লগে যখন পর্যাপ্ত পরিমানে

Organic ট্রাফিক থাকবে তখন খুব সহজেই এ্যাডসেন্স অনুমোদন হবে। কারন গুগল চায় এমন কাউকে এ্যাডসেন্স একাউন্ট দিতে

যার ব্লগের মাধ্যমে তারা ভিজিটরদের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে লাভবান হতে পারে।

আপনি যখন ভালভাবে SEO মেনে ভালমানের ইউনিক কনটেন্ট শেয়ার করবেন তখন ট্রাফিক অটোমেটিক্যালি বাড়তে থাকবে। তবে

একটা ব্যাপার মনে রাখবেন কোন প্রকার Paid Traffic মাধ্যমে ভিজিটর বৃদ্ধি করে কোন লাভবান হতে পারবেন না। যখন কোন প্রকার

সোসিয়াল মিডিয়া ছাড়া শুধুমাত্র গুগল সার্চ ইঞ্জিন হতে পর্যাপ্ত পরিমানে ভিজিটর পাবেন তখন Adsense আপনাকে সহজে অনুমোদন

করবে।

.

০৭. ব্লগের ডিজাইন ভাল না হওয়া কারন:-

আপনি যখন কোন ব্যবসা শুরু করবেন তখন অবশ্যই আগে আপনার দোকান বা ব্যবসার জায়গাটি ভালভাবে সাজিয়ে চক-চকে করে

নেবেন। তারপর ব্যবসা করার প্রয়োজনীয় উপকরন দোকানে বসাবেন। ব্লগের বিষয়টি ঠিক সে রকম। আপনার ব্লগটি যদি ভাল

ডিজাইনের না হয় এবং Google Adsense কোড বসানোরমত পর্যাপ্ত জায়গা না থাকে তাহলে কিছুতেই এ্যাডসেন্স অনুমোদন করবে

না।

কারণ আপনার ব্লগের প্রয়োজনীয় জায়গায় বিজ্ঞাপন বসিয়ে পরিষ্কারভাবে ভিজিটরদের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করাতে না পারলে তাদের কোন

লাভ হবে না। কাজেই ব্লগের ডিজাইন অবশ্যই Responsive, স্বচ্ছ এবং Adsense Ad ব্যবহারের উপযোগী হতে হবে।

.

০৮. টপ লেভেলে ডোমেন ব্যবহার না করাকারন:-

বিশেষ করে এখনকার সময়ে Google AdSense অনুমোদন পাওয়ার ক্ষেত্রে Domain অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। অধীকাংশ নতুন

ব্লগাররা তাদের ব্লগে ভালমানের ডোমেন ব্যবহার না করে Sub-Domain (Blogspot.com অথবা WordPress.com) ব্যবহার করে

Google AdSense এর জন্য আবেদন করেন। যার ফলে দেখা যায় গুগল তাদের আবেদন সরাসরি নাকুচ করে দেয়।

তবে এক সময় ছিল যখন Sub-Domain দিয়েও খুব সহজে AdSense অনুমোদন করা সম্ভব হত, কিন্তু সম্প্রতি এ বিষয়টি বেশ কঠিন

হয়ে গেছে। কাজেই বিষয়টি সহজ করার জন্য ব্লগিং শুরু করার পূর্বে একটি ভালমানের Custom Domain কিনে নেয়াটাই উত্তম হবে।

আপনি নেমচিপ কোম্পনি থেকে ভালোমানের ডোমেন ক্রয় করতে পারেন।

.

.

আমার প্রিয় এফিলিয়েট প্রোগ্রাম সাইট ভিজিট করে দেখতে পারেন। আপনার ও পছন্দ হতে পারে।

.

Best Freelancer Site is Fiverr.

Domain Site Namecheap.

Most Popular Best hosting Site is Bluehost.

English Grammar checker is Grammarly.

Most Beautiful theme and plugin site is Theme Forest.

Math Formula desk Site is formuladesk

.

.

০৯. Privacy Policy ও Terms of Service Inform না থাকার কারন:-

যে কোন ব্লগের জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ Pages যেমন- About Us, Privacy Policy এবং Contact Us পেজ রাখা আবশ্যক। কারণ

এগুলির মাধ্যমে Adsense আপনার ব্লগ সম্পর্কে জেনে নিয়ে নিশ্চিত হতে পারবে আসলে ব্লগটার Owner আপনি কি না।

কয়েক বৎসর আগে Google AdSense Team একটি নিয়ম করেছিল যে, প্রত্যেকটি ব্লগের অবশ্যই Privacy Policy পেজ রাখতেই হবে।

তারই নিয়মে অবশ্যই বাকি পেজগুলিও রাখাটা ভাল।

.

১০. অন্য বিজ্ঞাপন ব্যবহার করার কারন:-

আপনি যদি ব্লগে কোন ধরনের বিজ্ঞাপন ব্যবহার করে থাকেন তাহলে Google Adsense এ আবেদন করার সময় অবশ্যই সেগুলি

Remove করে নিবেন।

কারণ Google Adsense Team আপনার ব্লগটি রিভিউ করার সময় কোন ধরনের বিজ্ঞাপন দেখতে পেলে Adsense অনুমোদন

করবে না। তাছাড়া এটি Adsense Policy এর আওতায়ও পড়ে না।

.

আরো কিছু কারন আছে এগুলো হলো:-

এ ছাড়াও Google Adsense অনুমোদন না হওয়ার আরও বেশ কিছু কারণ রয়েছে। যেগুলি সম্পর্কে এখন বিস্তারিত আলোচনা করা

সম্ভব নয়। তাই আমি নিচে সংক্ষেপে বিষয়গুলি তুলে ধরছি। জেনে রাখলে ভালো হবে আশা করি:-

  1. আবেদনকারীর বয়স ১৮ বৎসর না হওয়া।
  2. Evil সাইটে ব্লগের লিংক করা থাকলে।
  3. সাইট Malware এ আক্রান্ত হলে।
  4. ব্লগটির প্রকৃত মালিক নিজে না হলে।
  5. ব্লগের Navigation সহজে বুঝা না গেলে।
  6. বাচ্ছাদের Privacy Protection Act এর বহিঃভূত হলে।
  7. ব্লগের কনটেন্টের ভাষা সাপোর্ট না করলে।
  8. পূর্বে কখন Adsense Account ব্যান হলে।
  9. সঠিকভাবে Adsense Policy অনুসরণ না করলে।

.

.

আমার ধারনা আপনারা বুঝতে পেরেছেন কি করলে আপনারা Google AdSense অনুমোদন পাবেন না। তাই আপনি যদি Google

AdSense অনুমোদন পেতে চান। তবে সঠিক নিয়ম ফলো করে কাজ শুরু করুন এবং এগিয়ে যান।

যারা ইতিপূর্বে Google Adsense এ Apply করে অনুমোদন করতে ব্যর্থ হয়েছেন তারা উপরের টিসগুলি ভালভাবে পড়লে পূর্বে আপনি

কোথায় ভূল করেছেন সেটি সহজে Find Out করতে পারবেন। অন্যদিকে যারা এখন Adsense এ Apply করেননি তারা এই টিপসগুলি

অনুসরণ করলে খুব সহজে প্রথমবারেই অনুমোদন করতে সক্ষম হবেন।

.

লেখা গুলো পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদেরকে শেয়ার করতে ভুলবেন না । আপনার সুচিন্তিত মতামত আমার একান্ত কাম্য।

তাই এই বিষয়ে আপনার যদি কোন মতামত থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই নিচে কমেন্ট করে জানাবেন। আমি আনন্দের সহিত আপনার

মতামত গুলো পর্যালোচনা করে রেপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করবো।

ভাল থাকবেন।

Leave a Comment