৩টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন আপনার জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারে জেনে নিন।

আমার মনে হয়, আমাদের জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণের যে ধারনাটি প্রচলিত, সেটিতে বেশ বড় ধরনের

সমস্যা রয়েছে। কারন, কাওকে জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করতে বললে যা ঘটে তা হল, আমি আসলে তাকে

তার আশপাশের নির্ধারিত কিছু বাঁধা নিয়মের মধ্যে তাকে ফেলে প্রশ্নটি করি।

আমার পরামর্শ হচ্ছে, জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ আমরা নিজেরাই করতে পারি ৩টা প্রশ্নের উত্তর দেয়ার

মাধ্যমে। এবং আমার মতে জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণে এটি হল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ৩টি প্রশ্ন।

প্রথম প্রশ্ন: কোন অভিজ্ঞতাগুলো আমার জীবনে  হোক তা আমি চাই?

 আমি  বলতে পারি কেন এটা এত গুরুত্বপূর্ণ। দুই ধরনের লক্ষ্য আছে, একটা হল Means Goal

(উপায়), আরেকটা হল End Goal.

মানুষ আসলে Means Goals গুলো পূরণ করার পেছনে বেশী সময় দেয় কিন্তু তারা বুঝে না যে

Means Goal এবং End Goal এর মধ্যে পার্থক্য আছে। Means Goal হল, CGPA ভালো করা,

গ্রাজুয়েশন শেষ করা, নির্দিষ্ট একটা চাকরী পাওয়া, অবসরের জন্য টাকা জমানো ইত্যাদি। কিন্তু ঐ

মানুষদের যদি জিজ্ঞাসা করা হয় কেন তুমি এই কাজগুলো করতে চাও? উত্তরে একটা কারন আসে।

“আমি ভালো CGPA পেতে চাই কারন উচ্চতর শিক্ষার জন্য এটা আমাকে সাহায্য করবে।” এই “কারন”

আমাদের End Goal এর দিকে নিয়ে যায়। End Goal হল অসাধারণ কিছু যার জন্য মানুষ পরিপূর্ণ

তৃপ্তি পায়। এটা নিজের সন্তান প্রথম কোলে নেয়ার মত, প্রথম নিজের ব্যাবসা খুলে প্রথম ক্রেতাকে সার্ভিস

দেয়ার মত, প্রথম বই পড়ে শেষ করার মত, নিজের তৈরি করা শিল্প নিয়ে সবাই প্রশংসা করার মত

আনন্দ পাওয়া হচ্ছে End Goal.

তাই আমি বলব জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণের প্রশ্নের উত্তর দেয়ার ক্ষেত্রে Means Goal এর কথা ভুলে

দিয়ে সরাসরি End Goal নিয়ে চিন্তা কর, তোমার জীবনে কোন অভিজ্ঞতাগুলো তুমি চাও? এখান

থেকেই তুমি তোমার অভিজ্ঞতার ইচ্ছাগুলো লিখে রাখতে পারো। এবং প্রশ্নের উত্তর লিখতে গিয়ে তুমি

খাতায় ৩টা ছক কেটে প্রথম ভাগে তোমার অভিজ্ঞতার ইচ্ছাগুলো লিখে ফেল।

নিজেকে জিজ্ঞাসা কর, কোন অভিজ্ঞতা তুমি মন থেকে চাও? তুমি কার সাথে থাকতে চাও? তোমার

বাড়িতে কি কি চাই? কোন দেশগুলো ঘুরতে চাও?  কোন জায়গাগুলোতে যেতে চাও? কোন ধরনের

পরিবার তুমি চাও? মনে যতঁ অভিজ্ঞতার কথা আশে সব লিখে রাখ।

দ্বিতীয় প্রশ্ন: আমি কিভাবে নিজেকে তৈরি করতে পারি এ অভিজ্ঞতা অর্জন করার জন্য?

মনের এই অভিজ্ঞতা অর্জন করতে আপনাকে কি শিখতে হবে? কোন বিষয়ে জ্ঞান থাকতে হবে? কোন

ভাষা শিখতে হবে? কোন যোগ্যতা আপনার থাকতে হবে? ইত্যাদি। খেয়াল করে দেখবেন আপনি

আপনার মনের ইচ্ছা পূরণ করতে যা করতে চান, সেটাই আপনার লক্ষ্য এবং এই লক্ষ্য অর্জনেই আপনি

মন থেকে তৃপ্ত হবেন। তাই সমাজের বেঁধে দেয়া নিয়মে নিজেকে যোগ্য করবেন না। নিজের ইচ্ছাগুলো

পূরণে নিজেকে যোগ্য করে তুলুন। 

তৃতীয় প্রশ্ন: আমি পৃথিবীকে কি দিতে পারবো আমার অভিজ্ঞতা আর যোগ্যতার মাধ্য দিয়ে?

আমি বিশ্বাস করি, আপনি যখন নিজের লক্ষ্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর লিখবেন, শেষ প্রশ্নের

উত্তর আপনাকে পরিপূর্ণতা দিবে।আপনি যদি কোন বিষয়ে দক্ষ হতে চান, সেই দক্ষতা অর্জনের পর

আরেকজনকে শেখান। আপনি যদি ভালো  মিউজিক করতে পারন, এই যোগ্যতা দিয়ে মানুষের জন্য গান

বানাও যা যুগ যুগ ধরে মানুষ মনে রাখবে। তৃতীয় প্রশ্নের উত্তরে আপনার যে তালিকা তৈরি হবে সেটি

 আপনাকে আপনার লক্ষ্য অর্জনের পরিপূর্ণতা অনুভব করাবে।

আমি মনে করি, আমার জীবনের লক্ষ্য কি হওয়া উচিৎ সেটি আমি ছাড়া আর কেউ সঠিকভাবে বলতে

পারবে না এবং সেটি সম্ভবও না। তাই এই তিনটি প্রশ্নের উত্তর নিজেকে দাও আর সিদ্ধান্ত নেন। জীবনের

লক্ষ্য কি হওয়া উচিৎ এবং কেন হওয়া উচিৎ।এই পদ্ধতি অনুসরনে আপনার উপকার হয়ে থাকলে

কমেন্টে করে জানাতে ভুলবে না।

Leave a Comment