সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর মাধ্যম সমূহ আলোচনা করো? পর্ব-২

অনেকেই মনে করেন যে, স্যোশাল মিডিয়াতে পেইড ক্যাম্পেন করলেই কাজ হবে ফলে এ্যানালাইসিস না করে পেইড ক্যাম্পেইন চালু করে বেশীরভাগ

ভাল ফলাফল নিয়ে আসতে পারে না। তাই সোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কে সু-স্পস্ট ধারনা না নিয়ে এবং টার্গেটেড কাস্টমার এবং বাজার যাচাই না করে

বা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ভাল করে না শিখে প্রমোশনাল ক্যাম্পেই চালু করা উচিত নয়। স্যোশাল মিডিয়া মার্কেটিং সম্পর্কে ভাল ধারনা থাকলে

ফ্রি মেথডে ক্যাম্পেইন করে কার্যকরী রেজাল্ট নিয়ে আসা সম্ভব।

প্রধান সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং/নেটওয়ার্কিং সাইট

www.facebook.com

www.youtube.com

www.twitter.com

www.flickr.com

www.plus.google.com

www.linkedin.com

www.tagged.com

www.digg.com

www.reddit.com

www.blogger.com

www.squidoo.com

www.stumbleupon.com

কিভাবে উপার্জন করা যায় ?
১. ব্লগিং এর মাধ্যমে আয়:

নিজস্ব একটি ওয়েব সাইট থাকলে সেখানে Adsense, Image Advertising, Affiliate Marketing ইত্যাদি বহুবিধ মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের

সুযোগ রয়েছে। শর্ত হচ্ছে, সাইটে পর্যাপ্ত ট্রাফিক/ ভিজিটর থাকতে হবে। সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর মাধ্যমে সাইটে পর্যাপ্ত ট্রাফিক জেনারেট

করা সম্ভব যা উপার্জনকে করবে নিশ্চিত।

২. ফ্রিল্যান্সিং আয়:

বর্তমানে প্রায় সবগুলো ফ্রিল্যান্সিং সাইটে সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর প্রচুর কাজ পাওয়া যায়। ফ্রিল্যান্সার এ রয়েছে Facebook, Twitter,

Youtube ইত্যাদি নামে ।

৩। www.fiverr.com

এটি নুতন এবং ভিন্ন ধারার একটি ফ্রিল্যান্সিং সাইট। ইতিমধ্যে সাইটটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ফ্রিল্যান্সিং সাইটসমূহে যেমন একজন বায়ার

কোন কাজ পোষ্ট করেন এবং উক্ত কাজের জন্য ফ্রিল্যান্সার রা বিড/আবেদন করেন। বায়ার তাদের মধ্যে থেকে একজনকে নির্বাচিত করেন।

তবে এখানে উল্টো হয়ে থাকে। অর্থাৎ, এখানে ফ্রিল্যান্সাররা কাজ বা সার্ভিস অফার দিয়ে থাকে। এখানে থেকে যে কোন বায়ার তার কাজ খুঁজে

নেয়। যারা সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এ দক্ষ তারা এ সাইটের মাধ্যমে প্রচুর উপার্জন করতে পারেন। যে সকল সোশ্যাল মিডিয়া সাইটের সাহায্য

এই মার্কেটিং এর প্রচার প্রচারনা করা হয় তাকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং মাধ্যম সমূহ বলে। নিম্নে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর সবথেকে জনপ্রিয় কয়েকটি মাধ্যম সম্পর্কে আলোচনা করা হোল।

 ফেসবুক মার্কেটিং সার্ভিস

ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বর্তমানে মানুষের জীবনে ব্যাপক প্রভাব রেখে চলেছে। পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তের

মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে দিচ্ছে ফেসবুক। ফেসবুক জাদুতে দূর হয়েছে সামাজিক বিচ্ছিন্নতা। ফেসবুক মাধ্যমের সদস্যরা নির্দিষ্ট কাউকে

বন্ধু হিসেবে বেছে নিতে পারেন। আবার কারও বন্ধুত্বের অফার ফিরিয়েও দিতে পারেন।

ফেসবুক মাধ্যমে শেয়ার করা ছবি, ভিডিও, মতামত ইত্যাদির ওপর মন্তব্য করা যায়। আবার চলে পাল্টা মন্তব্য। ব্যক্তিগত বার্তা পাঠানো যায়,

যা কেবল যাকে পাঠানো হয় সে-ই পড়তে ও দেখতে পারে, অন্যরা নয়। তাছাড়া নতুন বা পরিচিত বন্ধু খোঁজার জন্য ফেসবুকে বিভিন্ন ধরনের

নেটওয়ার্ক রয়েছে। নিজের পছন্দ অনুযায়ী গ্রুপ করে নেয়া যায়। ফেসবুকের সবচেয়ে মজার জিনিসটি হচ্ছে আলাপচারিতা (Chatting) ।

কাক্সিক্ষত বন্ধুটির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর ফেসবুকে থাকা সাপেক্ষে তার সঙ্গে আলাপ করা যায়। বর্তমান সময়ে পৃথিবীর প্রাই প্রতিটা দেশে

এর জনপ্রিয়তা অনেক অনেক বেশী। ফেসবুকের মাধ্যমে ফেসবুক ব্যবহারকারির কাছে কোন প্রতিষ্ঠান, পন্য বা সেবার প্রচারণা করে

দেয়াকেই ফেসবুক মার্কেটিং

করে। এটি আপনি নিজে বা কোন ফেসবুক মার্কেটারের মাধ্যমেও করতে পারেন। সহজ অর্থে ফেসবুকে যে বিজ্ঞাপন দেয়া হয় তাকেই ফেসবুক

মার্কেটিং বলে।

ইউটিউব মার্কেটিং সার্ভিস:

বর্তমান সময়ের অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ মার্কেটিং মাধ্যম হল  ইউটিউব মার্কেটিং। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এ সবথেকে বেশী কার্যকারী

মাধ্যম হল ইউটিউব মার্কেটিং। ইন্টারনেট এর সহজলভ্যতা যত

বেশী বৃদ্ধি পাচ্ছে তার সাথে ইউটিউব মার্কেটিং এর কার্যকারিতা তত বৃদ্ধি পেতে থাকবে। আপনি খুব সহজে একটি ভিডিও ভাইরাল করার

মাধ্যমে আপনি আপনার কোম্পানির বা ওয়েবসাইটের প্রচারও বাড়াতে পারবেন। প্রতিদিন প্রায় গড়ে ৫ বিলিয়ন ইউটিউব ভিডিও দেখে

থাকে। প্রতিদিন ৩০ মিলিয়ন ভিজিটর আসে।  এত ট্রাফিক এর কারনেই ইউটিউব এই মুহূর্তে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সব থেকে বড় মাধ্যম

হলো এটি।

ইন্সটাগ্রাম মার্কেটিং সার্ভিস:

বর্তমান সময়ের অন্যতম আরেকটি জনপ্রিয় ফোটো শেয়ারিং এর মাধ্যমের নাম ইন্সটাগ্রাম। বর্তমানে ৬০০  মিলিয়ন ইনিস্টাগ্রামের একটিভ

ইউজার আছে।  প্রতিদিনের হিসাব অনুযায়ী ৪০০ মিলিয়ন একটিভ ইউজার আছে।  ১৫০ মিলিয়ন ইউজার তাদের স্টোরি প্রতিদিন ইন্সটাগ্রামে

শেয়ার করে থাকে। টোটাল ইন্টারনেট ইউজারের ২০% মানুষ ইন্সটাগ্রাম ব্যবহার করে। এত কিছুর পরেও আপনি কিভাবে ইন্সটাগ্রাম মার্কেটিং

না করে বসে থাকবেন। আপনি ইন্সটাগ্রাম মার্কেটিং না করলে এই ২০% ইন্টারনেট ব্যবহারকারী আপনার এই বিজ্ঞাপনটি সম্পর্কে জানতেই

পারবে না।

গুগল প্লাস মার্কেটিং সার্ভিস :

প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগলের সামাজিক যোগাযোগ সেবা গুগল প্লাস। এতে ১০০ কোটির বেশি নিবন্ধিত ও নিয়মিত ৬০ কোটির অধিক সক্রিয়

ব্যবহারকারী রয়েছে। প্রতিনিয়ত এই সংখ্যা বেড়েই চলেছে। গুগল অথরশিপ হওয়ায় এটি অনলাইন মার্কেটিংয়ের একটি অন্যতম মাধ্যম

হয়ে দাড়িয়েছে। এই সাইটে কোনো কিছু শেয়ার করলে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসই) এর দিক থেকে অনেক সুবিধা দেয়। গুগল প্লাস

থেকে আপনি কি সুবিধা পাবেন তা দেখে নেওয়া যাক।

• এখানে ব্র্যান্ড পেইজ তৈরি করে সাজনোর সুযোগ আছে যারা এটিকে ব্যবহার করবে।।

• পেইজে কাস্টোমাইজড কাভার টেমপ্লেট ও থাম্বনেইল ব্যবহার করার সুযোগ দিয়ে থাকে।

• কনট্যাক্ট, ওয়েবসাইট ও জিওগ্রাফিক্যাল লোকেশনসহ আপনার ব্যবসায়ের যাবতীয় ব্যাপারে এখানে বিস্তারিত তথ্য যুক্ত করতে পারবেন ।

• আপনার সার্কেলে থাকা মানুষ দেরকর বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সাজিয়ে রাখতে পারবেন। পরবর্তীতে ঐ

নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির ব্যবহারকারীদের উদ্দেশ্য করে আপনার লেখা শেয়ার করতে পারবেন।

• আপনার চাইরে আপনার ব্র্যান্ডের জন্য একটি গুগল প্লাস পেইজ ইউনিক ইউআরএল পেতে পারেন।

• পেইজে বিভিন্ন ওয়েবমাস্টার ও এপিআই কনসোল সেবা পাবে, যা আপনার ব্র্যান্ড বা সেবাকে অন্যান্য অনলাইন প্লাটফর্মে ছড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ পাবেন।

লিংকডইন মার্কেটিং সার্ভিস:

প্রায় ২৮ কোটি ব্যবহারকারী নিয়ে লিংকডইন বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রফেশনাল নেটওয়ার্কিং

ওয়েবসাইট। এতে আপনার প্রফেশনাল প্রোফাইল তৈরি করার ও কমিউনিটি তৈরির সুযোগ পাবেন।

লিংকডইনও আপনার পণ্য বা সেবার জন্য ব্র্যান্ড আইডেন্টিটি তৈরির সুযোগ সুবিধা দেয়।

এই সাইট থেকে আপনি কি কি সুবিধা পাবেন –

 এখানে আপনার ব্র্যান্ডের জন্য গ্রুপ তৈরি ও সংযুক্তদের সঙ্গে তা প্রোমোট করতে পারবেন।

তৈরি করা ব্র্যান্ড গ্রুপকে নিজের মতো সাজাতে পারবেন।

 আপনার গ্রুপে যারা আছে তাদের মাধ্যমেই নতুন কানেকশনের সাজেশন পাবেন। যার মাধ্যমে আপনার নেটওয়ার্ক আরও বৃদ্ধি পাবে।

আপনার ব্যবসায়ের ধরণ অনুযায়ী সম্ভাব্য ক্লায়েন্ট খুজে নিতে পারবেন।

সহজে ইমেল কালেক্ট করে ই মেইল করতে পারবেন তাদের কাছে।

টুইটার মার্কেটিং সার্ভিস :

টুইটার ব্যবহারকারীর নিকট আপনার বিজ্ঞাপন পৌঁছে দেয়ার সিস্টেমকেই টুইটার মার্কেটিং বলে। এখনে

আপনি অডিও, ভিডিও, টেক্সট এর মাধ্যমে আপনার প্রচার চালাতে পারেন বা একটা একটিভ

প্রোফাইলের মাধ্যমেও আপনার প্রচার ও চালাতে পারেন। আপনি টেক্সট এর ক্ষেত্রে এখানে সর্বোচ্চ ১৪০

অক্ষরের বার্তা আদান-প্রদান ও প্রকাশ করতে পারেন। টুইট বার্তা লেখার জন্য সদস্যরা সরাসরি

টুইটারের মেইন ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারেন তাছাড়াও, মোবাইল ফোন বা এসএমএসের মাধ্যমেও

টুইট আপডেট করার সুযোগ রয়েছে। টুইটারকে ইন্টারনেটের এসএমএস বলে অভিহিত করা হয়।

এই সাইট থেকে আপনি কি কি সুবিধা পাবেন –

• নিজের নামে একটি ইউনিক ইউআরএল পাবেন ।

• ইচ্ছে মত ব্যবসায়ের ধরন বা পছন্দ অনুযায়ী প্রোফাইল ছবি, হেডার ছবি এবং ব্যাকগ্রাউন্ড দিয়ে সাজাতে পারবেন।

• আপনার ব্যবসায়ের ওয়েবসাইট যুক্ত করতে পারবেন সাইটটিতে, যা ব্যবহারকারীদের সরাসরি ভিজিট করার সুযোগ দেবে।

• আপনার ব্যবসায়র কাজে জন্য ওয়েবসাইটে টুইটার এপিআই উইজেট ব্যবহার করতে পারবেন।

• হ্যাশট্যাগ, অ্যাট (@) ইত্যাদি সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করে আপনার কাঙ্খিত ব্যাক্তি বা কমিউনিটির সঙ্গে যোগাযোগ সমন্বয় করতে পারেন।

পিন্টারেস্ট মার্কেটিং সার্ভিস :

পিন্টারেস্ট বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত জনপ্রিয় হওয়া সোশ্যাল বুকমার্কিং সেবার সাইট। বর্তমানে প্রায় ৮

কোটি ব্যবহারকারী রয়েছে সাইটটিতে। ছবি ভিত্তিক এই ওয়েবসাইটটি আপনার পণ্য ও সেবার অনলাইন

মার্কেটিংয়ে সবচেয়ে কাজে দিবে। এখানে আপনি যা যা সুবিধা পাবেন:

আপনার ব্যবসায়র প্রোফাইল তৈরি করতে পারবেন এই নেটওয়ার্কে ।

• এটি আপনার ব্যবসায়ের নামানুসারে একটি পার্সোনালাইজড ইউজার নেম দেয়।

• এখানে আপনার অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া লিংক যুক্ত করতে পারবেন। যেমন এই সাইটের সঙ্গে

আপনার ফেইসবুক প্রোফাইল যুক্ত থাকলে আপনি যখনই কোনো ছবি পিন করবেন, তখন এটি

স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার ফেইসবুকে শেয়ার করে দিবে। আপনার একটি ওয়েবসাইট থাকলে এই সাইট

থেকে ডুফলো ব্যাকলিংক পেতে পারেন।

এসব মাধ্যম গুলির মাধ্যমে আপনি আপনার প্রিয় মানুষের সাথে যোগাযোগের পাশাপাশি ব্যবসায়ের

বিভিন্ন পণ্যের প্রচার প্রচারনা চালাতে পারবেন। ফলে আপনার ব্যবসায়ের আয় বাড়বে এবং আপনার

সাইটে প্রচুর পরিমানে ভিজিটর আসবে।আপনি খুব সহজে সফল ব্যবসায়ি হতে পারবেন।।

Leave a Comment