পড়াশোনা করলে আপনার জীবনে কি ঘটে তার সর্ম্পকে জানুন?

আমরা অনেকেই আছি যারা সব সময় পড়তে পছন্দ করি, কিন্তু কোনো বিষয়ে পড়া কেন এতো গুরুত্বপূর্ণ

সেটাই  আমরা অনেকে জানি না। আশা করি এই ব্লগটি পড়ার মাধ্যমে সবাই জেনে যাবো পড়াটা কেন

গুরুত্বপূর্ণ। তাহলে আর দেরি না করে আসুন জেনে নেয় পড়লে আপনার জীবনে কি কি ঘটে থাকে?

 ) যোগাযোগের মাধ্যম তৈরি হয় পড়াশোনা মাধ্যমে:

 যোগাযোগের একটি বিশেষ মাধ্যম হল পড়া। পড়ার মাধ্যমে অন্যের সাথে খুব সহজেই যোগাযোগ করা

যায়, অন্যের সম্পর্কে জানা যায়। যদি একজন মানুষ কিছু না জানে তবে সে শেয়ার করার তেমন কিছু

খুঁজে পায় না আর সেক্ষেত্রে কথাও আগায় না। এমনকি সে বুঝতেও পারে না অন্যরা কি নিয়ে আলাপ

করছে। পড়ার মাধ্যমে যোগাযোগের একটি শক্ত ভীত গড়ে তোলা যায়। সুতরাং পড়া একটি মাধ্যম যার

দ্বারা আমরা পৃথিবীর সবার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারি।

 ) পড়াশোনা করলে কল্পনা শক্তি সৃজনশীলতা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে:

পড়া মানুষের ভাবনাকে প্রসারিত করে থাকে। কল্পনার জগৎ যেন অন্য পৃথিবীর জন্ম দেয়। যে জগতে

একজন মানুষ তার নিজ রাজ্যের রাজা হয়ে যায়। মানুষ কল্পনা বিলাসী। সে কল্পনা করতে ভালবাসে

আর এই পড়া তাকে নতুন নতুন উপকরণ দেয়। পড়ার মাধ্যমে আমরা একটি নতুন পৃথিবীতে প্রবেশ

করতে পারি যেখানে কোন কিছুই অসম্ভব নয়। আমাদের জানার থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি দৃষ্টিকোণ দিতে

পারে একটি বই, যা কিনা চিন্তাশক্তির চেয়েও বেশি কিছু। এটি একটি বিশাল মাধ্যম যেখানে তুমি

তোমার চিন্তাশক্তি দ্বারা সংযোগ তৈরি করতে পারো। যা তুমি জানো আর যা তুমি প্রতিনিয়ত শিখছো

তার দ্বারা সিদ্ধান্তের একটি নতুন কাঠামোতে  পৌঁছাতে পারো।

) অন্য মানুষের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানা যায়:

যখন আমরা পড়ি আমরা মূলত অন্য কারো অভিজ্ঞতা বা জ্ঞান সম্পর্কে জানতে পারি, যা অনেক সময়

সাফল্যের গতিকে বাড়িয়ে দেয়।যেখানে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন কোন নির্দিষ্ট কিছু অর্জনের জন্য সেখানে

একই ভুল পুনরায় করার প্রয়োজন নেই।এটি অনেকটা পাহাড় থেকে দামী পাথর তোলার মত যা আমরা

বই থেকে আবিষ্কার করে থাকি। মানুষের সাফল্য, ব্যর্থতা,উপদেশ,অতীতের ভুল এসব থেকেই মানুষ

শিক্ষা নিয়ে থাকে। পড়া একটি শ্রেষ্ঠ মাধ্যম যা কিনা সকল মহান মানুষের জীবনী সম্পর্কে জানতে এবং

তাঁদের জীবন থেকে কিছু শেখার উপায় করে দেয়। তাই পড়ার কোন বিকল্প নায়। সাংস্কৃতিক,মানবিক,

পারিপার্শ্বিক, রাজনৈতিক, সামাজিক, সর্বোপরি সকল শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠা যায়। পড়া এমনই একটি

আলো যা একটি বদ্ধ ঘরে ঢোকার দরজা খুলে দেয়।

) পড়ার মাধ্যমে নতুন ধারণা সাথে পরিচিত হওয়া যায়:

 পড়ার মাধ্যমে জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি পায় যা কিনা নতুন দৃষ্টিভঙ্গির জন্ম দেয়। হাজারো মানুষের মনের

ভাবনাকে উজ্জীবিত করে। চোখের সামনে সাজিয়ে ধরে হাজারো রূপকে। বই অতি বাস্তবতা থেকে

পরাবাস্তবতার জগতে নিয়ে যেতে পারে যেকোনো মুহূর্তে। পড়ার মাধ্যমে মানুষ জ্ঞানী হয়, সত্যিকারের

শিক্ষায় সুশিক্ষিত হয়ে ওঠে।

 ) বিনোদনের একটি সহজ মাধ্যম হল পড়াশোনা:

 ছোটবেলা থেকেই শিশু কিশোরদেরকে বই এর সাথে পরিচিতি গড়ে তুলতে পারলে তারা খুব সহজেই

বইকে বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে বেছে নিতে পারবে। বই হল সবচেয়ে সহজলভ্য একটি বস্তু যা

কিনা বন্ধুর মত আমাদের দু’হাত ভরে দান করে।

 ) নিজের জীবন সর্ম্পকে জানা যায়:

 পড়ার মাধ্যমে পৃথিবী সম্পর্কে যেমন জানা যায় তেমনিভাবে নিজের সম্পর্কেও জানা যায় । আমার

আগ্রহ মূলত কিসে ? আমি কি চাই? আমার বেঁচে থাকার উদ্দেশ্যটা কি ? কীভাবে নিজের আত্মপরিচয়

গড়ে তোলা যায় ? কীভাবে কোনো কাজের পূর্বে সুন্দর পরিকল্পনা করা যায় ? স্মৃতিতে কত সুন্দরভাবে

কোনোকিছু মনে রাখা যায় ? এ সকল কিছু সম্পর্কে জানা সহজ হয় পড়ার মাধ্যমে। জীবনের চলার পথ

আরো সুন্দর করার জন্য পড়াটা অনেক সাহায্য করে।সমাজে সুন্দরভাবে বসবাসের জন্যও সাহায্য করে।

 জীবনে চলার পথে পড়ার গুরুত্ব অনেক বেশি:

 জীবন যেন একটি খেলা। এই জীবন খেলায় অংশগ্রহণের জন্য প্রয়োজন এর নিয়মনীতিগুলো ভালভাবে

জানা। যেকোনো পদক্ষেপ নেয়ার পূর্বে তার প্রস্তুতি নেয়া প্রয়োজন। পড়াটা একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম যার

মাধ্যমে আপনারা খুব সহজেই কোন কিছু সম্পর্কে ধারণা পেয়ে যেতে পারেন। বর্তমান চলমান বিশ্বে

প্রতিটি কর্মের প্রতিক্রিয়া পাওয়াটা খুব জরুরি। যেকোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর পূর্বে প্রতিটি খুঁটিনাটি

বিষয়ে তথ্য নিয়েই আমরা মূলত এগিয়ে যাই। আর এ জন্য পড়ার কোন বিকল্প নায়।

) মস্তিষ্কের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে পড়াশোনা:

 বেশিরভাগ সময়ে আমরা নিশ্চুপ থেকে পড়াশুনা করি। এর দ্বারা পড়াটা সরাসরি মস্তিষ্কের সাথে

সংযোগ রক্ষা করে। চুপ থাকা অবস্থায় মস্তিস্ক নীরব থাকে। একজন মানুষ পড়ার মাধ্যমেই প্রতিনিয়ত

শিখছে, জানতে পারছে এবং দেখতে পাচ্ছে জীবন সম্পর্কে বিভিন্ন লেখকের দৃষ্টিকোণ। এতে করে  জীবন

সম্পর্কে নিজের একটি সুন্দর প্রতিকৃতি দিতে পারা যায় খুব সহজেই।

তাই আমি বলতে পারি যে এভাবেই পড়ার গুরুত্ব নিয়ে লিখতে গেলে শেষ করা যাবে না। সর্বোপরি বলা

যায় যে, পড়া মূলত মানুষের জ্ঞান বৃদ্ধি করে। আর জ্ঞানী মানুষদের জন্য সফলতার দুয়ার সব সময়ই

থাকে উন্মুক্ত!

তাই আপনাকে সুন্দর ভাবে সাজাতে হলে পড়াশোনা অবশ্যই করতে হবে। তবেই আপনি সকল কিছু

সর্ম্পকে জানতে পারবেন এবং আপনার জীবনে সাফল্য আসবে।

ভালো থাকবেন।।

Leave a Comment