আমরা যারা স্টুডেন্ট, আমাদের সবারই কমবেশি বিভিন্ন সমস্যার মধ্য দিয়ে যেতে যায়। পড়তে বসার
চেয়ে পড়ায় মনোযোগ ধরে রাখা অনেক বেশি কঠিন একটা কাজ। তাই আজ জেনে নিন দারুণ কিছু
টিপস যার মাধ্যমে আপনি একই সাথে পড়াশুনায় মনোযোগী হতে এবং মনোযোগ ধরে রাখতে পারবেন:-
মোবাইল থেকে দূরে থাকুন
হয় মোবাইল থেকে আপনি নিজে দূরে থাকুন অথবা ফোনটাকে আপনার কাছ থেকে দূরে রাখুন। মাত্র
দশ বছর আগেও যা ছিল যোগাযোগের মাধ্যম তা এখন যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মোবাইল যেমন আপনার মনোযোগ নষ্ট করে তেমনি অতিরিক্ত ফোন ব্যবহারের ফলে ঘুমহীনতা,
ক্ষুধামান্দ্যের মত শারীরিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে। আর এর ফলে পড়াশুনা ব্যাহত হয়। তাই হয়
আপনার ফোন বন্ধ করে পড়তে বসুন অথবা সাইলেন্ট মুডে রেখে দিন। কয়েক মিনিট পর পর মোবাইল
চেক করার প্রবণতা থাকলে পড়তে বসাই মুশকিল সেখানে মনোযোগ ধরে রাখা তো দূরঅস্ত।
1.পড়ার উপযোগী পরিবেশ আছে এমন জায়গায় পড়তে বসুন:
নির্বিঘ্নে পড়া যায় এমন জায়গা খুঁজে নিয়ে পড়তে বসুন। বাইরের কোলাহল, লোকজনের চিৎকার
চ্যাঁচামেচি এড়িয়ে শান্ত নিরিবিলি একটা কোণে নিজের দপ্তর সাজিয়ে নিন। স্কুলে কিংবা কলেজে পড়ার
ক্ষেত্রে লাইব্রেরি অথবা কমন রুম ব্যবহার করুন। দশ জনের দশ রকম কথাবার্তা কানে এলে মন বিক্ষিপ্ত
হয়, পড়ায় মনোযোগ কমে যায়। যদিও সব সময় হয়তো পছন্দসই জায়গা নাও মিলতে পারে। সেক্ষেত্রে
আপনি ইয়ার প্লাগ ব্যবহার করতে পারেন।
2.অনাবশ্যক চিন্তা ভাবনা থেকে নিজে দূরে রাখার চেষ্টা করুন:
বই পড়ার সময় মাথায় আজেবাজে চিন্তা আসে না, এমন পড়ুয়া খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কবে কে আপনার
সাথে খারাপ ব্যবহার করেছিলো, পছন্দের সিনেমার ট্রাজিক সিন, টেস্টে বাংলাদেশের ভরাডুবির কারণ
এমন হাজারো অহেতুক চিন্তা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খেতে থাকে। এমন অবস্থায় নিজের ফোকাস ঠিক
রাখা কঠিন একটা কাজ। পড়াশোনায় নিজের মনোযোগ ধরে রাখার জন্য নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণ করা
তাই খুব জরুরি। যে মুহূর্তে মাথায় অন্য কোনো চিন্তা আসবে সেই মুহূর্তে নিজেকে সামলে নিন, অন্য সব
চিন্তা ঝেটিয়ে মাথা থেকে বিদায় করুন। আর এই কাজটা একমাত্র এবং একমাত্র আপনি নিজেই করতে
পারেন।
3.মাল্টিটাস্কিং বাদ দিন:
একই সাথে একাধিক কাজ করাকেই বলে মাল্টিটাস্কিং। যতোটুকু সময় আপনি পড়বেন, ঐ সময়টুকু শুধু
পড়ার পেছনেই ব্যয় করুন। একই সাথে বই পড়া, গেমস খেলা কিংবা নেট ব্রাউজিং করতে যাবেন না।
4.নিজের নিয়ম মাফিক পড়াশুনা করার চেষ্টা করুন:
পড়াশুনা সম্পূর্ণ আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। আপনি কখন পড়াশুনা করবেন, কয় ঘণ্টা পড়বেন,
কিভাবে পড়বেন, একা একা পড়বেন নাকি গ্রুপ স্টাডি করবেন এটা সম্পূর্ণই আপনার নিজস্ব ব্যাপার।
এক্ষেত্রে আপনার উচিত নিজের পছন্দকেই গুরুত্ব দেয়া। আপনার বন্ধুরা গ্রুপ স্টাডি করে বলেই যে
আপনাকেও গ্রুপ স্টাডি করতে হবে এমন কোনো কথা নেই, যদি আপনি একা একা পড়তে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ
করেন তবে সেটাই করুন। আপনার বন্ধু হয়তো দিনে আঠারো ঘণ্টা পড়াশুনা করে, তাই বলে
আপনাকেও যে আঠারো ঘণ্টাই বই সামনে নিয়ে বসে থাকতে হবে তা নয়। আপনি আপনার নিজস্ব
রীতিতে, নিজের নিয়মে, নিজের জন্য পড়ুন।
5.একই জিনিস বার বার পড়া থেকে নিজেকে বিরত রাখুন:
খুব বেশি পড়ুয়া যারা তাদের মধ্যে এই অভ্যাসটা বেশি দেখা যায়। একবার পড়ার পর আপনি
আরেকবার রিভাইস দিতেই পারেন। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই জিনিস বার বার পড়ার ফলে
একঘেয়েমি চলে আসে, পড়ার গতি কমে যায়। যে জিনিস দশ মিনিট পড়েই বুঝে ফেলার কথা, তখন সেই
জিনিস বুঝতে আপনার ঘণ্টা পেরিয়ে যায়। তাই একই জিনিস বার বার না পড়ে বরং কিছুদিন পর
আরেকবার চোখ বুলিয়ে নেয়া যেতে পারে। যে কোনো কিছুর বৈচিত্র্য আমাদের সেই জিনিসের প্রতি
আকর্ষণ বাড়ায়। পড়াশুনার ক্ষেত্রেও সেই একই নিয়ম। তাই একই পড়া বার বার না পড়ে বরং সব
সাবজেক্ট অল্প অল্প করে রোজ পড়ুন। পার্থক্যটা নিজেই ধরতে পারবেন আশা করি।
পড়ুন: Facebook কে অযথা সময় ব্যায় না করে আয় করুন ।
এগুলো মনোযোগ দিয়ে করলে আশা রাখি আপনার পড়াশোনার প্রতি মনোযোগ আসবে বলে আমি আশা
রাখি। আপনার জীবন আপনার সম্পদ তাই তাকে কিভাবে সাজানো যায় তা একদম আপনার ব্যক্তিগত
ব্যাপার তাই আপনার সুবিধার জন্য যা করনীয় তাই করে আপনার জীবনকে সাজানোর দাযিত্ব আপনার
নিজেরিই।
লেখা গুলো পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদেরকে শেয়ার করতে ভুলবেন না । আপনার
সুচিন্তিত মতামত আমার একান্ত কাম্য। তাই এই বিষয়ে আপনার যদি কোন মতামত থেকে থাকে তাহলে
অবশ্যই নিচে কমেন্ট করে জানাবেন। আমি আনন্দের সহিত আপনার মতামত গুলো পর্যালোচনা করে
রেপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করবো। ভাল থাকবেন।