থেমে থাকা জীবন থেকে মুক্তির উপায়

আমরা প্রায় সকলেই জীবনের কোন না কোন স্হানে এসে খনিকের জন্য থেমে যায়।সেটা হতে পারে

সাময়িক সময়ের জন্য কিন্তু যে টুকু সময় আমরা জীবন যুদ্ধে থেমে যায় ঠিক সে সময় টুকু খুব ভয়ানক

ও খারাপ সময় অতিবাহিত হয় মানুষের জীবনে।, এই স্থবির অবস্থা থেকে মুক্তির কোন উপায় জানা

নেই। কারো মনে হয় সর্ম্পকে আটকা পড়েছে, কেউবা চাকরিতে, আবার কারো কারো কাছে পুরো

জীবনটাই থমকে গেছে বলে মনে হয়! আর এমতাবস্থায় বিষণ্ণতা, অসহায়ত্ব, ভবিষ্যতের দুশ্চিন্তা

আমাদের গ্রাস করে ফেলে। অনেকের ক্ষেত্রে এতই বাজে লাগা শুরু করে যে,তারা নিজেদেরর জীবন ও

শেষ করে দেয়ার চিন্তা করেন কেউ কেউ। 

আরো জানুন: সাফল্য হবেই আপনার ইচ্ছা মত

আবার অনেকে অন্য মানুষের জীবনের সব কিছুই গোছানো দেখে, নিজের কোন গতি করতে না পারার

আক্ষেপ ভেতরে ভেতরে আমাদের কুরে কুরে খেতে থাকে। আমরা সবাই জীবনলব্ধ অভিজ্ঞতা বয়ে

বেড়াই নিজের সাথে। আর এই অভিজ্ঞতাই ঠিক করে দেয় আমরা কোন পরিস্থিতিতে কি অনুভব করব

এবং কিভাবে আচরণ করব। তাই আটকে থাকার এই বাজে অবস্থায়, আমাদের পক্ষপাতদুষ্ট মানসিকতা

থেকে বেরিয়ে আসার জন্য প্রথমেই নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে তারপর ভাল দিক বিবেচনা করে সামনের

দিকে অগ্রসর হতে হবে।

তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে আপনি থেমে থাকা জীবন থেকে কিভাবে নিজেকে মুক্ত

করবেন:

. থমকে থাকার অনুভূতি:

থমকে থাকার অনুভূতি, পরিবর্তন প্রয়োজনের বার্তা বহন করে, আপনি থমকে আছেন তার অর্ন্তনিহিত

কারন খুঁজে বের করে আপনার নির্দিষ্ট কিছু দিক বদলিয়ে ফেলতে হবে। জীবন সংকুচিত হয়ে যায়, 

প্রসারিত হওয়ার ইংগিত দেয়ার জন্যই!

 . অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা:

অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা আমাদের সবার লাইফকে কমবেশি খারাপ করে দেয়। নিজেদের জানা–

অজানায় আমরা অনেক সময়, এই বাজে অভিজ্ঞতা গুলো নিজেদের ঘাড়ে বয়ে বেড়াই। ইচ্ছা–অনিচ্ছা

সত্ত্বেও চাইলেও এগুলো মুছে ফেলা সম্ভব হয়ে উঠেনা, আর তখনই নিজের অভিজ্ঞতার কাছে নিজেকে বন্দী

বলে মনে হয়। এইসব  আভিজ্ঞতা হয়ত চিরতরে মস্তিষ্ক থেকে মুছে ফেলা না গেলেও, আশার ব্যাপার

হচ্ছে আমাদের মাথায় এদের পাগল নাচন বন্ধ করা সম্ভব। এর জন্য নিজের চিন্তাকে সচেতনভাবে

নজরদারিতে রেখে,যখনি এসব চিন্তা মাথায় ভর করতে চাইবে তখন নিজেই নিজের ব্রেইনকেকে সাজেশন

দিতে হবে ।আপনি আপনার ব্রেইনকে যেই ন্যারেটিভ শোনাতে বাধ্য করবেন সে তাই করবে। তাই

নিজেকে ক্রমাগতভাবে বর্তমানের অবস্থা নিয়ে চিন্তা করতে বাধ্য করাটাই হবে যুক্তিগত কাজ।

. নিজের ভূল অন্যের উপর চাপিয়ে দেওয়া:

যখন আমরা বন্দিত্ব অনুভব করি তখন আমাদের প্রথম প্রবৃত্তি হয়ে দাঁড়ায় নিজেকে উপেক্ষা করে, অন্য

কাউকে অথবা কোন পরিস্থিতিকে দোষারোপ করা। এটা ঠিক নয়,আমাদের উচিত তখন নিজের ভিতরে

ডুব দিয়ে নিজের অনুভূতি,চিন্তার প্রতি নজর দেয়া।  আমরা কোন বিষয় সম্পর্কে নিজেদের দৃষ্টিকোণ

বদলালে, পুরো পরিস্থিতি অটোমেটিক বদলে যায়।

. মিত্থ্যে অজুহাত দেখানো:

আপনার যদি আসলেই কোন কিছু করার ইচ্ছা থাকে তাহলে আপনি তা করার উপায় খুঁজে বের করবেন,

আর  তা না  হলে কোন অজুহাতের পিছনে নিজের গা ঢাকা দিবেন।  নিজের কাছে স্বীকার করাটা কঠিন

হলেও কিন্তু এটাই বাস্তব। কেন কাজটি করা সম্ভব না তাতে নজর না দিয়ে,কেন কাজটি আপনার

অবশ্যই করা উচিত তাতে পুর্ণ মনোযোগ দেয়ার চেষ্টা করা উচিত। তাহলে আপনি সামনের দিকে এগিয়ে

যেতে পারবেন।

. নিজেকে মুক্ত করা:

নিজেকে নিজের ব্যক্তিত্ব অনুযায়ী চলার স্বাধীনতা দেয়ার মাধ্যমে, আমরা আশেপাশের অন্যদেরকেও

তাদের স্বকীয়তা বজায় চলার সুযোগ দেই। আর নিজস্বতা বজায় রাখার মাধ্যমে মুক্ত অনুভব করা যায়।

আপনি যখন নিজের চ্যালেঞ্জ গুলো নিয়ে খোলামেলাভাবে স্বীকার করবেন এবং নিজেকে সহায়তা করার

সুযোগ দিবেন অন্য কাউকে, তখন এর ফলে একটি বিশ্বাসে ঘেরা মুক্ত পরিবেশের সৃষ্টি হবে। তাহলে

দেখবেন নিজেকে মুক্ত অনুভব করছেন।

. জীবনের চলার পথকে গুরুত্ব দিন। গন্তব্য কে নয়:

 আমরা যখন ‘কী ঘটা উচিত‘, সেটা বাদ দিয়ে ‘কি ঘটতে পারে‘ সেই সম্ভাবনায় মনোযোগ দেই, তখন

জীবন আমাদের সামনে অনেক সু্যোগ এবং আনন্দের দরজা খুলে দেয়। তাই কোথায় যেয়ে পৌঁছাব সেটা

না ভেবে,কেন এবং কিভাবে যাচ্ছি সেদিকে আলোকপাত করাটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। লাইফ কঠিন হতে

পারে, তাই বলে এটাকে বোঝার মত না দেখে, যত প্রকার রঙে রাঙানো যায় তত বেশি অর্থবহ মনে হবে।

 .আপনি আপনার স্বপ্ন পূরনের উপর জোড় দিন:

 থমকে থাকার অনুভুতি নিসন্দেহে বাজে,কিন্তু এই অনুভুতিকে জোর করে দূর করার চেষ্টা না করে,

আপনি আপনার চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকুন। আপনার চেষ্টার মাত্রা ছোট হতে পারে, কিন্তু যতক্ষণ আপনি

সামনে এগোতে থাকবেন ততক্ষন পর্যন্ত এই ঠুনকো অনুভূতি আপনাকে অবশ করতে পারবে না। নিজেকে

স্মরণ করিয়ে দেন আপনার প্রচেষ্টা আপাতদৃষ্টিতে ক্ষুদ্র মনে হলেও, এই মুহুর্তে আপনি আপনার সর্বোচ্চটা

দিচ্ছেন আর এখনকার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট।

আরো জানুন: সুখী জীবনের জন্য ২০ টি শিক্ষানীয় উপদেশ যা আপনার জীবনকে বদলে দেবে।

চলো মান সময়ের উপর প্রাধান্য না দিয়ে, নিজের উপর আস্থা রেখে, মন খুলে শ্বাস নিন আর একে একে

সমস্যাগুলো যা আপনাকে সামনে এগোতে দিচ্ছে না,সেগুলোকে  সমাধানের চেষ্টা করুন। এক সময়

দেখবেন আপনার কোন সমস্যা থাকবে না। বিভিন্ন সমস্যার সমাধান আপনার কাছে ধরা দিবে।

থেমে থাকা জীবন থেকে, মুক্তি পেতে চাই।

এসো আগে নিজেকে বদলায়।।

Leave a Comment