আপনি যদি গেম খেলতে ভালোবাসেন, তাহলে আপনি আপনার এই শখটিকে খুব সহজেই লাভজনক
একটি পেশা হিসেবে বেছে নিতে পারেন এবং এই পেশা থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থও আয় করতে
পারবেন। তাই ফ্রি সময় নষ্ট না করে সেই সময়টিতে অনলাইনে গেম খেলে আয় করার মত একটি
লাভজনক পেশায় রূপ দিন।
গেম খেলে আয় করবেন যেভাবে:
সবার মনে এই প্রশ্নটি চলে এসেছে যে কিভাবে নিজেকে একজন গেম টেষ্টার হিসেবে গড়ে তোলা যায় এবং
অনলাইনে বিভিন্ন গেইম খেলে আয় করা যায়। গেইম কোম্পানীগুলো সব সময় তাদের ক্রেতারা তাদের
গেইম সম্পর্কে কি ধরনের মনোভাব পোষণ করবেন তা জানতে আগ্রহী। এটি জানতে কোম্পানীগুলো
চরম আগ্রহী যে তাদের গেইমটি ক্রেতারা আসলেই পছন্দ করবে, না গেইমটিতে কোন ধরনের গুরুতর
ত্রুটি রয়েছে। তাই গেইম রিলিজ করার পূর্বেই যে কোন গেইম কোম্পানীর একজন গেইম টেষ্টারের
প্রয়োজন পড়ে যে তাদের গেইমটির বিভিন্ন ত্রুটি ও অন্যান্য দিক সম্পর্কে তাদেরকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে
সাহায্য করতে পারবে। এই ধরনের কাজের জন্য সাধারণত ঘন্টা চুক্তিতে পেমেন্ট দেওয়া হয়ে থাকে।
আপনি এভাবে গেম খেলে আয় করতে পারেন।
গেম টেষ্টার হিসাবে আপনার করনীয় কাজ:
আপনি নিজেই একবার ভাবুন তো যে যদি আপনাকে এখন একটি গেইম টেষ্ট করতে দেওয়া হয় তাহলে
আপনার কি কি করণীয় হতে পারে? এখন সে সর্ম্পকে আলোচনা করবো :-
1.একজন গেইম টেষ্টারকে গেইম খেলার মধ্যেই গেইমটি সংক্রান্ত বিভিন্ন ভুলগুলিকে খুঁজে বের করতে
হয়। ভুলগুলি হতে পারে কোডিং সংক্রান্ত, ডিজাইনগত, লজিক্যাল যেকোন ধরনের ভুল।
2.আপনি যখন অনেক বড় কোন কোন প্রজেক্টে একদল অভিজ্ঞ গেইম টেষ্টারের সাথে কাজ করবেন
তখন আপনি কোন ত্রুটি খুঁজে পেলে আপনাকে প্রথমেই দেখতে হবে যে উক্ত ত্রুটিটি আগেই কোম্পানীকে
জানানো হয়েছে কি না। যদি না হয়ে থাকে তাহলে আপনি ত্রুটি সম্পর্কে রিপোর্ট করুন এবং পুনরায়
সমস্যাটি দেখা দিচ্ছে কিনা সেটি যাচাই করে দেখুন।
আরো জানুন:
3.গেইম খেলার সময় অবশ্যই গেইমটির গ্রাফিক্স এবং আউটলুকের দিকে লক্ষ্য রাখুন এবং সেটি একজন
ইউজারকে কতটা প্রভাবিত করতে পারবে তা ভাবুন। এছাড়াও গেইম প্রসেস, আউটকাম,
মাল্টিপ্লেয়ারসহ গেইমের বিভিন্ন ফাংশনালিটি যাচাই করে দেখুন।
4.এছাড়াও একজন গেইম টেষ্টারকে গেইমটি নিয়ম অনুসারে ও গেইমের মূল নিয়মগুলি অনুযায়ী
পরিচালিত হচ্ছে কিনা এবং ভিন্ন ভিন্ন অপারেটিং সিস্টেমে বা একই অপারেটিং সিস্টেমের বিভিন্ন ভার্সনে
গেইমটির পারফর্মেন্স কেমন সে সব বিষয়ে বিস্তারিত গবেষণা করতে হয়।
গেইম টেষ্টার হতে চাইলে আপনার করণীয়:
ইচ্ছা করলেই যে কেউ একজন গেইম টেষ্টারের কাজ পাবেন না। গেইম টেষ্টারের কাজটি অনেক সহজ
মনে হলেও কিছু টেকনিক্যাল দক্ষতা ছাড়া আপনি কখনোই কাজটি সঠিকভাবে সম্পাদন করতে পারবেন
না।
1.গেইম টেষ্টার হওয়ার জন্য বিভিন্ন গেইম, সেগুলির ফিচার সমূহ এবং কিভাবে সেগুলো খেলতে হয় সে
বিষয়ে অবশ্যই আপনার যথেষ্ট জ্ঞান অর্জন করতে হবে।
2.গেইমটি খেলার সময় আপনি যদি কোডিং এর বা ডিজাইনগত কোন সমস্যা লক্ষ্য করেন তাহলে
আপনি যেন সেটি সম্পর্কে গেইমটির ডেভেলপার, প্রোগ্রামার এবং ডিজাইনারকে যথাযথভাবে বুঝাতে
পারেন সে রকম দক্ষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে।
3.একটি গেইম কিভাবে কাজ করবে তা গেইমটির অ্যালগরিদম ঠিক করে। এই কাজটি করার জন্য
অবশ্যই কোডিং সম্পর্কে আপনার প্রাথমিক ধারণা থাকা প্রয়োজন।
আয় করবেন যেভাবে:
গেম টেষ্টার হিসেবে আপনি কত টাকা আয় করতে পারবেন তা নির্ভর করে আপনার উপর অর্পিত
দায়িত্বের উপর। নতুন একজন টেষ্টারকে অবশ্যই কেউ খুব বেশি টাকা দিবে না। নতুন একজন গেইম
টেষ্টারকে প্রতি ঘন্টায় সাধারণত ১০-১৫ ডলারের মত পেমেন্ট দেয়া হয়ে থাকে। তবে সময়ের সাথে সাথে
আপনার অভিজ্ঞতা যত বাড়বে, আপনার পেমেন্টও তত বাড়তে থাকবে। একজন ভালো মানের গেইম
টেষ্টার প্রতি বছর ৪০০০০ ডলারের কাছাকাছি আয় করে থাকেন।
যেভাবে শুরু করবেন কাজটি:
গেইম টেষ্টারের কাজ করার প্রধান সমস্যা হলো গেইম টেষ্টিং এর কাজ পাওয়া যায় এমন নির্ভরযোগ্য
একটি ওয়েবসাইট খুজে বের করা। বড় বড় মার্কেটপ্লেসে এ ধরনের কাজ থাকলেও সেখানে অভিজ্ঞদের
সাথে লড়াই করে পেরে ওঠা আসলেই কষ্টকর। আবার ইন্টারনেটে এ ধরনের কাজের জন্য হাজার হাজার
ওয়েবসাইট থাকলেও তার অধিকাংশই ভুয়া। আপনার যদি উপরের বর্ণিত দক্ষতাগুলি থেকে থাকে
তাহলে আপনি অবশ্যই লিংকড ইন এ একটি অ্যাকাউন্ট তৈরী করুন এবং হিউম্যান রিসোর্স
ম্যানেজারদের দিকে লক্ষ্য রাখুন যে তারা কখন তাদের নতুন গেইমের জন্য একজন টেষ্টার চান।
গেইম টেষ্টার হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার মাধ্যমে আপনি অনলাইনে গেইম খেলে আয় করতে পারবেন।
আর যদি এখন আপনার মনে হয় যে আপনি কাজটির জন্য উপযুক্ত তাহলে আজই কাজ শুরু করে দিন।