এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সাফল্যে অজর্নের গুরুত্বর্পূণ দিক নির্দেশনা।

অনলাইনে নিজস্ব ব্লগ বা ওয়েবসাইট ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের পণ্য বিক্রির প্ল্যাটফর্মই হচ্ছে

এফিলিয়েট মার্কেটিং। আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইট থেকে সহজে আয় করতে চান তাহলে আপনার

এফিলিয়েট মার্কেটিং গাইড সম্পর্কে অবগত হওয়া জরুরি। এফিলিয়েট মার্কেটিং গাইডে প্রথম নির্দেশনাই

হচ্ছে সাইন আপ করে বিক্রির জন্য নিজস্ব জায়গা উপযোগী পণ্য নির্ধারণ করে নেয়া।বিভিন্ন এফিলিয়েট

মার্কেটিং নেটওয়ার্ক থেকে সেরা ১০টি অ্যফিলিয়েট প্রোগ্রাম দেখে পছন্দ মতো দু’একটি নির্বাচন করে

নিতে পারেন। নির্দিষ্ট এফিলিয়েট মার্কেটিং গাইড নিয়ে যে পণ্যটির অ্যাডভারটাইজিং করতে চান সেটার

লিংকে আপনি একটি স্বতন্ত্র এফিলিয়েট আইডি পাবেন।

আরো জানুন:

যখন কেউ আপনার দেয়া লিংকে ক্লিক করবে এবং পণ্যটি কিনবে তখন বিক্রিত পণ্যের দামের ওপর

আপনি একটা কমিশন পাবেন। এফিলিয়েট মার্কেটিং গাইড এ নতুনদের জন্য প্রথম পরামর্শ হচ্ছে সঠিক

পণ্যের জন্য সঠিক ক্রেতা টার্গেট করা। যদি সঠিক ক্রেতার কাছে সঠিক পণ্য পৌঁছে দেয়া যায় তবেই সে

পণ্য ক্রয়ের ওপর থেকে নির্দিষ্ট কমিশন পাওয়াটা সহজ হয়ে যায়।

1.সংকল্প দৃঢ় করতে হবে:

আপনি যদি শুধু শোনা কথায় একবার চেষ্টা করে দেখতে চান তাহলে আমি মনে করি এফিলিয়েট

মার্কেটিং আপনার জন্য নয়। এটা এমন কিছু নয় যেখান থেকে আপনি রাতারাতি মিলিওনিয়ার হয়ে

যাবেন। এখানে দক্ষতার প্রয়োজন।আপনি যদি সত্যিই দক্ষতার সাথে এটাকে নিজের ক্যারিয়ার হিসেবে

নিতে চান সেক্ষেত্রে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হোন। এখানে শিখতে সময় এবং শিক্ষকের প্রয়োজন।আপনাকে সংকল্প

দৃঢ় করতে যে আপনি কাজ করে আয় করতে পারবেন।

2.ওয়েবসাইট তৈরি করা বনাম না করা

যদি আপনার মনে হয় যে একটা ওয়েবসাইট তৈরি না করেই আপনি অনেক টাকা আয় করতে পারবেন

তাহলে আপনি ভুল। ওয়েবসাইট ছাড়াও আপনি আয় করতে পারবেন। কিন্তু সেক্ষেত্রে আপনি করছেনটা

কী? ধরুন, ফেসবুকে আপনি একটা পেজ তৈরি করে সেখান থেকে প্রচুর আয় করছেন। কিন্তু ফেসবুক

কর্তৃপক্ষ যদি আপনার পেজটা রিমোভ করে দেয় তখন আপনার কী করার আছে!সেজন্যই আপনার

নিজের একটা ওয়েবসাইট এবং সেখানে নিজস্ব কাস্টমার থাকা জরুরি।

3.ভবিষ্যতের লক্ষ্য স্থির করতে হবে:

প্রত্যেকেই তাৎক্ষণিক আয় করতে চায়। সেক্ষেত্রে অন্য কোম্পানির পণ্য বিক্রি করে সেটার ওপর কমিশন

নেয়া যায়। কিন্তু সবসময় এটা মাথায় রাখা উচিত যে কীভাবে ক্রেতাকে নিজের ব্যবসার দিকে

ফেরানো যায়। ক্রেতার সাথে যোগাযোগ রক্ষা এবং ভবিষ্যতে তাদের সাথে সম্পর্ক বজায় রেখে নিজস্ব

একটি ওয়েবসাইট খোলাই আপনার প্রথম কাজ। এখান থেকেই হোক শুরু, এরপর যাবেন পরবর্তী বড়

বড় স্টেপগুলোতে।

4.আপনি যে সর্ম্পকে ভাল জানেন তার পেছনে লেগে থাকুন:

অনেকেই যে ওয়েবসাইটটা তৈরি করে সেটা নিয়ে তাদের যথেষ্ট ধারণা থাকে না। আপনি যা করছেন

সেটার প্রতি যদি আপনার তাগিদ না থাকে, সেটার জন্য যদি আপনি রোজ ভোরে বিছানা ছেড়ে উঠতে

না পারেন তবে নিশ্চিত থাকুন সে কাজটি আপনি বেশিদিন করতে পারবেন না।এমনকি যখন আপনি

ওয়েবসাইটি দাঁড় করাচ্ছেন তখন এর প্রত্যেকটা কনটেন্টে আপনার আগ্রহ থাকা জরুরি। আপনার ওয়েব

সাইটের বিষয় নির্ধারণ অবশ্যই যথাযথ রিসার্চ এবং অনুপ্রাণিত হওয়া উচিত।


5.নির্দিষ্ট একটি জায়গা নির্ধারণ করুন:

আপনার ওয়েবসাইটের জন্য একটা নির্দিষ্ট জায়গা নির্ধারণ করাটা কৌশলের একটা অংশ। আপনি যে

পণ্য নিয়ে ব্যবসা করছেন সেটা যদি জায়গা উপযোগী না হয় তবে লাভের কোন সম্ভাবনা নেই। এর জন্য

নিচের প্রশ্নগুলো মাথায় রাখতে পারেন :-

*এখানকার লোকজন কি এই জায়গার সাথে সম্পর্কিত কোন কনটেন্ট খোঁজ করছে?

*এখানে কি এমন কোন সমস্যা আছে যেটা আপনি সমাধান করতে পারেন?

* গুগলে সার্চ করার সময় তাদের রেজাল্ট পেজে কি অন্যান্য ব্যবসার অ্যাডভারটাইজিং থাকে? এখান থেকে কি টাকা আয় করা যাবে?

*এই বিষয়টা কি আপনার ক্ষমতার বাইরে বা এখানে সেরা হবার মতো যথেষ্ট জ্ঞান আপনার আছে কি না?

প্রতিযোগী সাইটগুলো কি অপ্রতিরোধ্য? এখানে আপনি জায়গা করে নিতে পারবেন তো?

6.ভাল মাপের হোস্টিং কিনতে হবে:

ফ্রি ওয়েব হোস্টিং অথবা ব্লগিংয়ে আপনি আপনার ব্যবসা শুরুর চেষ্টা করতে পারেন। তবে এটা খুব

একটা সুবিধার নয়। আপনি যদি এফিলিয়েট মার্কেটিং এবং ওয়েবসাইট তৈরির বিষয়ে যথেষ্ট দৃঢ়

সংকল্পমনা হোন এবং সত্যিই এখান থেকে আয় করতে চান তবে ইন্টারনেটে নিজের জায়গা কিনে নেয়া

দরকার। এক্ষেত্রে পাশের বাসার কোন প্রযুক্তিবিদের তৈরি সার্ভার ব্যবহার না করাই বুদ্ধিমানের কাজ।

7.এবার একটি ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে:

৫টি ফ্রি ওয়ার্ডপ্রেস বিজনেস থিম দেখে নিতে পারেন আপনার সুবিধার্থে। এখান থেকে আপনার পছন্দ

মত একটি থিম নিয়ে ওয়ার্ডপ্রেসে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে আপনার এফিলিয়েট বিজনেস শুরু

করতে পারেন। এফিলিয়েট ব্যবসার জন্য ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটই বেস্ট।

8.নতুনদের জন্য এফিলিয়েট মার্কেটিং – কী বিক্রি করবেন

পণ্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে:-

* যে পণ্যটি বিক্রি করতে যাচ্ছেন সেটা আপনি নিজে কিনবেন তো ?

** আপনার কনটেন্টের সাথে সরাসরি ম্যাচ হয় এমন পণ্য বিক্রি করুন।

*** পণ্য বিক্রির সময় নিজের খ্যাতির বিষয়টা মাথায় রাখবেন। যা বিক্রি করছেন তা পেয়ে ক্রেতা সন্তুষ্ট হবে তো?

9.এফিলিয়েট মার্কেটিং পণ্য কোথায় খুঁজে পাবেন:

এফিলিয়েট নেটওয়ার্ক: এগুলো হচ্ছে এমন ওয়েবসাইট যেগুলো নির্দিষ্ট ব্যাবসায়ীর এফিলিয়েট প্রোগ্রাম

নিয়ন্ত্রণ করে। এখানে শত শত ব্যাবসায়ীরা এফিলিয়েটদের সাইন আপ করানোর জন্য অপেক্ষা করে

থাকে। এই লিস্টে ১০টি সেরা এফিলিয়েট প্রোগ্রাম বা নেটওয়ার্ক রয়েছে যেখান থেকে আপনি এক বা

একাধিক নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত হয়ে তাদের পন্য বিক্রি করতে পারেন।

সরাসরি ব্যাবসায়ীরর সাইটে যান: কিছু কিছু ব্যাবসায়ী অ্যাফলিয়েট নেটওয়ার্কের আওতায় না গিয়ে

নিজেই বিক্রি এবং পেমেন্ট পরিচালনা করে থাকে। আপনি চাইলে সরাসরি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে পণ্য

ক্রয়ের কমিশন নিতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করা ভালো। কারণ অনেক ব্যবসায়ীই

ঠিকমতো কমিশন দেয় না। তাই পরিচিত ব্যবসায়ীর কাছে যাওয়াই ভালো।

10.এফিলিয়েট লিংক এবং ব্যানার কোথায় বসাবেন:

ওয়েবসাইটের সাইডবারে দেখার জন্য ব্যানার রাখা উচিত। টাকা আয় হয় মূলত কনটেন্ট থেকে।

আপনার কনটেন্টেই ব্যানারটি অ্যাড করে দিবেন। কেউ আপনার কনটেন্ট পড়তে শুরু করার মানে সে

ক্রয়ের জন্য আগ্রহী। সেজন্যই ব্যানারকে কনটেন্টের সাথে রাখা জরুরি।

11.প্রয়োজনীয় কনটেন্ট ছাড়া কিছুই দিবেন না:

এফিলিয়েট মার্কেটিং গাইড এ কনটেন্টের বিষয়ে জোর দিয়ে বলার কারণ হচ্ছে ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষণের

ক্ষেত্রে এটা সত্যিই খুব গুরুত্বপূর্ণ। কনটেন্ট যদি ভালো না হয় তাহলে কিছুতেই ভিজিটর থাকবে না।

বিক্রির প্রথম ও অন্যতম উপাদান হচ্ছে একটা অসাধারণ কনটেন্ট তৈরি করা।

12.ভালমানের পেজ তৈরি করতে হবে:

আপনার পেজ, রিভিউ, টিউটোরিয়ালস ইত্যাদিতে টার্গেট ট্রাফিক অ্যাড করুন। আপনার কনটেন্ট এবং

অ্যাফলিয়েট লিংক কাজ করছে কি না সেটা জানার জন্য হলেও কিছু ভিজিটর দরকার।আপনার অফারে

টার্গেট ট্রাফিক পাওয়ার টিপস সমূহ :-

*আপনার কাস্টমার আছে এমন অন্য কারো ওয়েবসাইটে গেস্ট পোস্ট করুন।

*সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনার কনটেন্ট শেয়ার করুন।

*একটা ফ্রি ডাউনলোড লিংক তৈরি করুন ।

*নতুন কনটেন্টের বিষয়ে জানিয়ে আপনার সাবসক্রইবারদের মেইল করুন।

13.পেজ পুনরাবৃত্তি করতে হবে:

এখন আপনার একটা পেজ আছে এবং আপনি সেটা নিয়ে কাজ করছেন। এবার আপনার কাজ হলো

পেজে নতুন নতুন কনটেন্ট পোস্ট করা। পেজ কিছুতেই ছেড়ে যাওয়া যাবে না। সবমসয় এটার সাথে

লেগে থাকতে হবে।

14.প্রত্যেক ভিজিটরকে কাউন্ট করতে হবে:

প্রত্যেক ভিজিটরকেই আপনার কাস্টমার হিসেবে ট্রিট করুন। তাদের সাথে যোগাযোগ রাখার জন্য

বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করুন। ভবিষ্যতে তারা আবার আপনার ওয়েবসাইট ভিজিটিংয়ে আসবে এবং

পণ্য কিনবে এমন সম্পর্ক স্থাপন করুন। কোন কাস্টমারই যেন খালি হাতে না যায় এ বিষয়টা নিশ্চিত

করুন।

আরো জানুন:

এফিলিয়েট মার্কেটিং গাইড থেকে আপনি জানলেন একজন নতুন এফিলিয়েটর হিসেবে আপনার কী করা

উচিত এবং কী করা উচিত নয়। কীভাবে আপনি কাজ শুরু করতে পারেন এবং কোনটার পর কোন

টাতে হাত দিবেন এসবই এখন আপনার জানা। সুতরাং, এই এফিলিয়েট মার্কেটিং গাইড কাজে লাগিয়ে

নিজের মেধা ও শ্রমের মাধ্যমে এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে চাইলেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন।

Leave a Comment