অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে অন্যর পণ্যের প্রচারের মাধ্যমে সেগুলিকে বিক্রয় করা চেষ্টা করা এবং যখনই
প্রচারের মাধ্যমে কোন পণ্য বিক্রয় হবে তার বিপরীতে নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন গ্রহণ করার প্রক্রিয়া।
এখানে আপনাকে কোন প্রকার পণ্য কেনার বা বেচার ঝামেলা পোহাতে হবে না। এমনকি নিজের আলাদা
ভাবে ই-কমার্স ওয়েবসাইট প্রতিষ্ঠা করারও প্রয়োজন পড়ে না। আপনাকে শুধুমাত্র আপনার ওয়েবসাইটের
মাধ্যমে ভিজিটরদের পণ্যের সম্পর্কে ধারণা প্রদান করতে হবে, যাতে তারা পণ্যটি ক্রয় করতে আগ্রহী
হয়।
দ্রুত ও সহজে অনলাইনে টাকা আয় করার মাধ্যমগুলির মধ্যে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এখন সবার কাছেই
অনেক বেশি জনপ্রিয়। সফল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হওয়ার উপায় খুঁজতে অনেকেই ইন্টারনেটের বিভিন্ন
আর্টিকেল এবং টিউটোরিয়াল দেখেন।এমনকি, অনেক ওয়েবমাস্টারও বর্তমানে তাদের ওয়েবাসাইটকে
শুধুমাত্র পে-পার ক্লিক প্রোগ্রামের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে ওয়েবসাইটে আসা ভিজিটরদের পরিমাণকে
কাজে লাগিয়ে নতুন কোন উপায়ে ইনকাম করতে আগ্রহী হচ্ছেন।আর কারণেই আস্তে আস্তে তারা
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর দিকে ঝুঁকে পড়ছেন।
একজন সফল এফিলিয়েট মার্কেটার হওয়ার উপায় সমূহ:
একজন সফল এফিলিয়েট মার্কেটার হতে হলে আপনাকে বিভিন্ন বিষয় সর্ম্পকে জানতে হয়। আজ আমি
কিছু গুরুত্বর্পূণ বিষয় সর্ম্পকে আলোচনা করবো। আশা করি আপনাদের উপকারে আসবে।
নিশ নির্বাচন:
এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে নিশ হচ্ছে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা আপনার সফলতার দায়ভার গ্রহণ
করে। নিশ হলো এমন একটি নির্দিষ্ট বিষয় যা নিয়ে আপনি কাজ করতে আগ্রহী। যেমন, আপনি যদি
দেখেন যে কোন ওয়েবসাইটে শুধুমাত্র রাউটার সম্পর্কেই আর্টিকেল রয়েছে এবং বিভিন্ন রাউটারের
সম্পর্কে সেখানে রিভিউ করা হচ্ছে, তাহলে উক্ত ওয়েবসাইট রাউটার নিশ নিয়ে কাজ করে, এটা সহজেই
অনুমান যোগ্য।
আমার মতে, সবকিছু নিয়ে একসাথে কাজ করার চাইতে কোন একটি নির্দিষ্ট নিশ নিয়ে কাজ করলে
সবচেয়ে বেশি সফল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এজন্য আপনাকে অবশ্যই একটি উপযুক্ত নিশ এবং তার
জন্য উপযোগী ভিজিটরদের টার্গেট করে কাজ করতে হবে।
নিশ নির্বাচন করার পর আপনাকে নিশ সম্পর্কিত বিভিন্ন পণ্য এবং সেবা সম্পর্কিত বিষয়ে ভিজিটরদের
জানাতে হবে। উদাহরণ স্বরুপ আপনার নিশ যদি ব্লগিং হয়ে থাকে, তাহলে আপনি Hootsuite,
WPengine, Genesis Themes ইত্যাদির প্রচার করতে পারেন।
আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটর আনতে হবে:
অন্যান্য পণ্যের মতই আপনারও যদি ভিজিটরের প্রয়োজন হয়, তবে আপনাকে সেটিকে প্রচার করতে
হবে। সার্চ ইঞ্জিন এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনার উপস্থিতি সম্পর্কে সবাইকে জানাতে হবে। তবে
কখনোই ট্রাফিক ভিত্তিক কোন সেবা ক্রয় না করাই ভালো। কারণ, ১ লক্ষ সাধারণ ভিজিটরের চাইতে
আপনার নিশ সম্পর্কিত ১ হাজার ভিজিটর আপনার জন্য বেশি লাভজনক।
এক্ষেত্রে সার্চ ইঞ্জিন থেকে আসা ট্রাফিক সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত বলে মনে করা হয়। কারণ, এখান থেকে
শুধুমাত্র সেইসব ভিজিটরই ওয়েবসাইটে আসে, যারা উক্ত পণ্য ক্রয় করতে বা সে সম্পর্কে জানতে
আগ্রহী।
আপনার ওয়েবসাইটের প্রচারণার জন্য একারণে অবশ্যই আপনাকে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা
এসইও এর প্রতি অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। আপনার ওয়েবসাইটটি সার্চে উপস্থিত থাকার মানেই হচ্ছে
আপনার পণ্যের রিভিউ সম্পর্কে মানুষ জানতে আগ্রহী। সেদিকে বেশি খেয়াল রাখবেন।
ভিজিটরদের বুঝতে শিখুন:
আপনি যদি ভিজিটরদের ভুল পণ্য সম্পর্কে ধারণা দেন, তাহলে এটি আপনার জন্য ব্যর্থতা ছাড়া আর
কিছুই বয়ে আনবে না। আপনাকে অবশ্যই আপনার ভিজিটর সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। আপনার ব্লগের
ভিজিটররা কোন প্রকৃতির এবং তারা কি সম্পর্কে জানতে চায়, এগুলি বুঝতে পারলেই আপনি তাদের
চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন পন্যের রিভিউ আপনার ওয়েবসাইটে দিতে পারবেন। আর একারণেই নিশকে
উপরে এতটা গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
ভিজিটরদের গ্রহন যোগ্যতা বেশি:
ওয়েবমাস্টাররা বিভিন্ন সাইটের অ্যাফিলিয়েশন নেওয়ার ব্যাপারে ভিন্ন ভিন্ন মত দিয়ে থাকেন। তবে
ইন্টারনেটে থাকা বড় বড় কোম্পানী যেমন শেয়ার এ সেল, কমিশন জংশন এবং অ্যামাজনের মতো সেরা
এফিলিয়েট প্রোগ্রাম এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করাটাই সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত বলে মনে করি আমি।
আপনি উপরের যে কোম্পানীর অ্যাফিলিয়েশন নিয়েই কাজ করেন না কেন, মোটামুটি সব কোম্পানীর
কাজের প্রক্রিয়াই একই ধরনের। তবে আপনার ভিজিটরের কাছে এদের মধ্য থেকে কোন কোম্পানীর
গ্রহণযোগ্যতা বেশি, সেটা বুঝেই আপনার অ্যাফিলিয়েশন নিতে হবে।
আপনি যদি এমন কোন ওয়েবসাইটের অ্যাফিলিয়েশন নেন, যেখান থেকে আপনার ভিজিটর পণ্য কিনতে
আগ্রহী নন সেক্ষেত্রে আপনার ওয়েবসাইট কোন কাজেই আসবে না।
সফল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হওয়ার উপায় জানার চাইতে বড় ব্যাপার হলো সেগুলি জানার পরে তা
নিয়ে কাজ করা। শুধু বসে বসে কেউ সফল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হতে পারে না। এর জন্য বিনিয়োগ,
মেধা, পরিশ্রম ৩টিরই প্রয়োজন হয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে সার্চ ইঞ্জিনে ওয়েবসাইটকে র্যাংক করাতে
অনেক বেশি সময়ের প্রয়োজন হয়।
আরো জানুন:
এমন সময়ে ধৈর্য্য ধরার মত মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে তারপরেই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করা উচিৎ।
আর শুরু করার আগে এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে সফল কিছু ওয়েবসাইট ঘুরে ঘুরে দেখার উচিৎ, জানার
চেষ্টা করা উচিৎ যে, কেন তারা সফল, তাদের সফলতার পেছনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা কিসের। তাহলে,
মাথায় আইডিয়া আসবে, স্ট্র্যাটেজি জানা যাবে এবং সফল হওয়া সহজ হবে।