অনলাইনে আয় করা এখনকার সময়ে তরুণ সমাজের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষার্থীরা
তাদের পড়াশুনার পাশাপাশি নিজ কর্ম দক্ষতায় স্বাবলম্বী হচ্ছে এই অনলাইনে Freelancing এর
মাধ্যমে। পড়ালেখা শেষে বা পড়ালেখার সাথে সাথে ফ্রিল্যান্সিং এ গড়ে নিতে পারেন আপনার ভবিষ্যৎ
ক্যারিয়ার। Freelancing হচ্ছে মাল্টি বিলিয়ন ডলারের একটা বিশাল বাজার। উন্নত দেশগুলো
কাজের মূল্য কমানোর জন্য Outsourcing করে থাকে। আমাদের পার্শবর্তী দেশ ভারত এবং
পাকিস্তান সেই সুযোগটিকে খুবই ভালভাবে কাজে লাগিয়েছে। আমরাও যদি ফ্রিল্যান্সিং এর বিশাল
বাজারের সামান্য অংশ কাজে লাগাতে পারি, তাহলে এটি হতে পারে আমাদের অর্থনীতি মজবুত করার
শক্ত হাতিয়ার।
তাহলে আর দেরি না করে আসুন জেনে নেয় Freelancing এর বিষয়ে বিস্তারিত।
- রোনাল্ড রিগান এর সেরা ২৫ উক্তি!!অনুপ্রেরণামূলক উক্তি।শিমন পান
- হিটলারের কিছু মূল্যবান কথা ও উক্তি।শিমন পান
- Rabindranath Tagore Best 25 Quotes!! Inspirational Quotes(Change Your Life).
- Queen Elizabeth II Best 25 Quotes!! Inspirational Quotes(Change Your Life).
- Oscar Wilde Best 25 Quotes!! Inspirational Quotes(Change Your Life).
Freelancing বলতে কি বুঝায়:
সাধারন কথায় চাকুরীর বাইরে নিজের ইচ্ছামত কাজ করার স্বাধীনতা হচ্ছে Freelancing।
Freelancing -এর সাথে আর একটি শব্দ প্রকাশ্য ভাবে জড়িত, তা হচ্ছে Outsourcing।
ইন্টারনেটের ব্যাবস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরনের কাজ নিজ প্রতিষ্ঠানের বাইরে অন্য
কাউকে দিয়ে করিয়ে নেয়। এসব কাজ করানোকেই বলে Outsourcing । আর যারা আউটসোর্সিং
করেন তাঁদের বলা হয় আউটসোর্সার বা বায়ার। সাধারণতঃ এরাই ফ্রিল্যান্সার-দের ক্লায়েন্ট হয়ে থাকে।
আরো জানুন: Fiverr কাজ করার কিছু বেসিক নিয়ম-কানুন জেনে নিন।
Freelancing হল একটি স্বাধীন পেশা, তাই এটি ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিলে আপনি নিজের ইচ্ছে
অনুযায়ী, যখন ইচ্ছে, যেখান থেকে ইচ্ছে কাজ করতে পারবেন। বাড়িতে বসেই ছোট থেকে বড়
কোম্পানির বা কোনও ব্যাক্তির কাজ করতে পারবেন। আর এতে আপনার কোনও ডিগ্রি বা
অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেট এর ও প্রয়োজন নেই, তবে কম্পিউটারের মাধ্যমে করা যায় এমন কোন কাজে
যথাযথ জ্ঞান বা অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা থাকতে হবে। আর এই পেশার পারিশ্রমিক গতানুগতিক চাকুরির
চেয়ে একটু বেশিই হয়ে থাকে। যদিও এটা আপনার কর্মদক্ষতার উপর নির্ভর করে। এমন অনেক
ফ্রিল্যান্সার আছে যাঁরা নিজের উচ্চ বেতনের চাকুরী ছেড়ে এখন Freelancing করছেন এবং তাঁরা
মনে করেন Freelancing এই তাঁরা অনেক বেশী আয় করেন এবং সফল। তবে চাকুরী করার
পাশাপাশিও Freelancing করা যায়।
কোথায় কাজ পাবেন:
অনলাইনে হাজার হাজার ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস আছে যেখানে এই ধরনের কাজ পাওয়া যায়। এছাড়া
নিজের পোর্টফোলিও বানিয়েও সরাসরি কাজ পাওয়া যেতে পারে। কাজে ভালো অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা
থাকলে বিভিন্ন কোম্পানিতে দীর্ঘমেয়াদির স্বাধীন চাকুরিও পাওয়া যায়।
Freelancing কাজ শুরু করতে যা দরকার:
একটি ল্যাপটপ অথবা ডেক্সটপ কম্পিউটার থাকতে হবে।
ভালো মানের ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে।
কাজ করার ইচ্ছে ও চেষ্টা থাকতে হবে।
কাজ শেখা ও শেখার পর অনুশীলন করার জন্য প্রয়োজনীয় সময় ও মানসিকতা থাকতে হবে।
এছাড়া বিভিন্ন অনলাইন কমিউনিকেশন সিস্টেম যেমন- স্কাইপ, ইমেইল ইত্যাদি সম্পর্কে বেসিক ধারনা থাকতে হবে।
নতুনদের জন্য অনলাইনে আয়ের সহজ ৫টি উৎস:
মূলত অনলাইনে যারা ক্যারিয়ার গড়তে চান তাদের আগে দক্ষতা অর্জন করা উচিৎ। তবুও নতুন
অবস্থায় ও আপনি কিছু কিছু পদ্ধতিতে অনলাইনে আয় করতে পারবেন। এবারের আলোচনা সেই সম্পর্কে
আশা করি আপনাদের কাজে আসবে।
মাইক্রোওয়ার্কার্স এর মাধ্যমে আয় করা:
ছোট ছোট কাজের মাধ্যমে আয়ের সব চাইতে জনপ্রিয় ওয়েবসাইট হচ্ছে মাইক্রোওয়ার্কার্স। আপনি যদি
নিজেকে কিছুটা ঝালিযে নিতে চাচ্ছেন অথবা পড়াশুনার পাশাপাশি নিজের এবং ইন্টারনেটের বিল উসুল
করার কথা চিন্তা করে থাকেন তবে এই ফ্রিন্যান্সিং সাইট টা আপনার জন্য । আর বর্তমান মাইক্রো-
ফ্রীলান্সিং বিশ্বে অনেক সাইট রয়েছে যেখানে আপনি সামান্য কিছু কাজের ধারনা নিয়ে অনায়াসে মাসে
৩০০-৬০০০ টাকা উপার্জন করতে পারবেন। সবচেয়ে ভাল এবং বেশি কাজ পাওয়া যায় এমন একটি
সাইট হল https://www.microworkers.com/ ।
মাইক্রোওয়ার্কার্স এর মূল বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:
1.এখানে কাজ করার জন্য কোনো বিড করতে হয় না।
2.কাজগুলো খুবই ছোট হয়ে থাকে।প্রতিটি কাজ সম্পন্ন করতে সাধারণত ২ মিনিট থেকে সর্বোচ্চ ৩০ মিনিট সময় লাগবে।
3.কাজটি আপনি সত্যি সম্পন্ন করেছেন কিনা তার একটি প্রমাণ দিতে হয়।কীভাবে প্রমাণ দেবেন তার বর্ণনা কাজের বর্ণনার সঙ্গেই পাবেন।
4.কাজগুলো যেহেতু ছোট, তাই অর্থের পরিমাণও সামান্য। প্রতিটি কাজ ০.১০ ডলার থেকে শুরু করে ৮ ডলার পর্যন্ত হয়ে থাকে।
5.একটি কাজ একবারই করতে পারবেন।
6.মোট আয় ১০ ডলার হলে অর্থ উত্তোলন করতে পারবেন।
7.চারটি পদ্ধতিতে অর্থ উত্তোলন করা যায়—চেক, মানিবুকারস, পেপাল এবং অল্টারপে।
8.প্রথম বার অর্থ উত্তোলন করতে গেলে আপনার ঠিকানায় একটি চিঠি পাঠানো হবে, যাতে একটি পিন
নম্বর দেয়া থাকবে। এই পদ্ধতিতে আপনার ঠিকানা যাচাই এবং একজন ব্যবহারকারী যাতে দুটি
অ্যাকাউন্ট করতে না পারে, তা নিশ্চিত করা হয়।
কাজ কি রকম হতে পারে:
এখানের কাজ গুলো খুবই ছোট এবং সাধারন। যেমন, দুইটি ফেসবুক পেজে লাইক দিলেন, একটা
ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করলেন, অথবা ছোট একটা আর্টিকেল লিখে দিলেন। এর জন্য আপনি অর্থ
পেয়ে যাবেন। তবে মাইক্রোওয়ার্কার্স দিয়ে আপনি কখনোই ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন না। একেবারে
বেসিক অবস্থার জন্যই এই সাইটটির মাধ্যমে আপনি আয় করতে পারবেন।
ইউটিউবের মাধ্যমে আয় করা:
অনলাইনের এই যুগে ইউটিউবের কথা সবার জানা। কিন্তু আপনি জানেন কি, যে ইউটিউবের মাধ্যমেও
আপনি আয় করতে পারবেন অনেক টাকা। এর জন্য আপনার ভালো মানের একটি ইউটিউব চ্যানেল
থাকতে হবে। বিভিন্ন গেমের রিভিউ, রান্নার ভিডিও, বিভিন্ন টিউটোরিয়াল, মজার ভিডিও সহ বিভিন্ন
ভিডিও আপলোড করে আপনি অনলাইনে আয় করতে পারবেন। এখন এ সময়ে এর মাধ্যমে অনেক
মানুষ অনেক ডলার আয় করছে প্রতি মাসে।
ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে আয়:–
অনলাইনে আয়ের একটি জনপ্রিয় পথ হচ্ছে ওয়েবসাইট বা ব্লগ। আপনার যদি একটি ওয়েবসাইট থাকে
এবং নির্দিষ্ট পরিমান ভিজিটর থাকে তবে বিভিন্ন এড এজেন্সীর মাধ্যমে আপনিও আয় করতে পারবেন।
গুগল এডসেন্স ছাড়াও অনেক এড এজেন্সী রয়েছে যারা বিজ্ঞাপন দাতা হিসেবে আপনাকে অর্থ প্রদান
করবে। এখান থেকেও আপনি আয় করতে পারবেন। খুব অল্প পরিশ্রম করে।
ফাইবারের মাধ্যমে আয়:
ফাইবার হচ্ছে একটি জনপ্রিয় অনলাইন মার্কেটপ্লেস ।যেখান থেকে আপনি দক্ষতা অর্জন করলে নিয়মিত
ভাবে আয় করতে পারবেন। খুব অল্প পরিশ্রম করে।
বিভিন্ন কোম্পানির সাইবার নিরাপত্তা প্রদান করে অনলাইনে আয় জন্য:
বর্তমান এই প্রযুক্তির বিশ্বে সাইবার নিরাপত্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সঠিক জ্ঞান অর্জনের
মাধ্যমে আপনিও সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক প্রশিক্ষণ নিয়ে আয় করতে পারবেন। শুধু অনলাইন নয়,
বাংলাদেশের অসংখ্য প্রতিষ্ঠান গুলোতেও আইটি বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিয়োগ চলছে সাইবার নিরাপত্তা
বিশেষজ্ঞদের। আপনিও জ্ঞান অর্জন করে নিজের ক্যারিয়ারকে গড়ে তুলতে পারেন আইটি খাতে।
আশা করি উপরের তথ্য গুলো কাজে লাগিয়ে আপনিও অবসর সময় গুলোতে ফ্রিল্যান্সিং এ মনোযোগী
হবেন।
লেখা গুলো পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদেরকে শেয়ার করতে ভুলবেন না । আপনার
সুচিন্তিত মতামত আমার একান্ত কাম্য। তাই এই বিষয়ে আপনার যদি কোন মতামত থেকে থাকে তাহলে
অবশ্যই নিচে কমেন্ট করে জানাবেন। আমি আনন্দের সহিত আপনার মতামত গুলো পর্যালোচনা করে
রেপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করবো।
ভাল থাকবেন