এখনকার সময়ে চাকরির বাজার খুবই খারাপ। চাকরি এখন হয়ে গেছে কবির সোনার হরিন এর মতো
যেটি পাওয়া খুবই দুষ্কর। মামা চাচা, খালু আর পকেট গরম না থাকলে এই বাজারে চাকরি পাওয়া প্রায়
অসম্ভব বলা যায় । আর চাকরি বাদ দিয়ে যদি ব্যাবসা করতে চান তাহলে আপনাকে গুনতে হবে অনেক
টাকা। তো আজ আমি আপনাদেরকে কম পুঁজি অর্থ্যাৎ অল্প টাকার ব্যাবসা নিয়ে আলোচনা করবো।
আশা করি পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়বেন। ভাল লাগবে আশা রাখি।
ওয়েবসাইট ফ্লিপিং করে আয়:
ওয়েবসাইট ফ্লিপিং এর ম্যাধ্যমে অল্প পুঁজিতে বেশ ভালো ব্যাবসা করা সম্ভব। ওয়েবসাইট ফ্লিপিং করতে
গেলে আপনাকে প্রথমে ভালো একজন ওয়েব ডিজাইনার হতে হবে এবং খুব নিখুঁত কাজ জানতে হবে।
ওয়েবসাইট ফ্লিপিং থেকে ব্যাবসা করতে হলে আপনাকে প্রথমে একটি ওয়েবসাইট ক্রিয়েট করতে হবে।
এবং ওয়েবসাইট ক্রিয়েট করতে ২০০০/৪০০০ টাকা লাগে ডোমেইন কেনার জন্য।
ডোমেইন কিনলেই আপনার ওয়েবসাইট ক্রিয়েট হয়ে যাবে।
আরো জানুন: ওয়েব সাইট খুলুন আর আয় করুন
এরপর আপনাকে আপনার ওয়েবসাইটটিতে প্রচুর পরিমানে
কাজ করতে হবে এবং ভালো ভালো সব কনটেন্ট তৈরি করতে হবে। এবং আপনার সাইটে প্রচুর ভিউয়ার
আনতে হবে যতো বেশি ভিউয়ার আনবেন ততো বেশি আপনার সাইটটি জনপ্রিয় হতে থাকবে। আপনি
আপনার সাইটটি এমন ভাবে সাজাবেন যাতে খুব সহজে বায়ারদের চোখে পড়ে আপনার সাইটটি। যার
ফলে বায়াররা যখন আপনার সাইটটি কিনতে চাইবে তখন আপনি অনেক টাকাতে বিক্রি করতে পারবেন
এটি কম পুঁজির অন্যতম একটি ব্যাবসা। এটি বেশ জনপ্রিয় একটি কাজও বটে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় :
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হল অনলাইনের যেকোনো প্রোডাক্ট প্রোমোট করা এবং যদি কোনো ব্যাক্তি
আপনার এড দেখে প্রোডাক্টটি কিনে তাহলে আপনি কিছু টাকা কমিশন পাবেন এটিই হল অ্যাফিলিয়েট
মার্কেটিং। এর জন্য আপনাকে প্রথমে একটি অ্যাফিলিয়েট একাউন্ট ক্রিয়েট করতে হবে আপনি যে সাইট
থেকে পন্য গুলির এড দিতে চান সেই সাইট এবং এরপর আপনাকে একটি ওয়েবসাইটও ক্রিয়ট করতে
হবে যেটির মাধ্যমে আপনি এড দিবেন।
আরো জানুন: এফিলিয়েট মার্কেটিং কি?
এরপর আপনার সাইটে প্রচুর ভিউয়ার আনতে হবে এবং তারপর আপনার এফিলিয়েট লিংকে ঢুকে যদি
কেউ আপনার প্রমোট করা পণ্যটি ক্রয় করে তাহলে আপনি ঐ সাইট থেকে কমিশন পাবেন। এভাবে
আপনি যতবেশি লিংক শেয়ার করে পণ্য বিক্রি করতে পারবেন তত বেশিই ইনকাম হবে। এটা একটা খুব
সহজ ইনকাম সাইট আপনি একটু চেষ্টা করলে পারবেন আশা করি।আমি ও এফিলিয়েট মার্কেটিং করে
আয় করছি তাই আপনাদের কে জানালাম।
ইউটিউবিং করে আয়:
এই ইউটিউব থেকেও ব্যাবসা করা সম্ভব এবং তাও খুবই সল্প পুঁজি ব্যাবহার করে। এই জন্য প্রয়োজন সল্প
দামি ল্যাপটপ এবং একটি ওয়াইফাই কানেকশন। আপনার কাছে যদি ল্যাপটপ কেনার টাকা নাও থাকে
তবে আপনি আপনার যে স্মার্ট ফোনটি রয়েছে সেটি ব্যাবহার করেও কাজ করতে পারবেন এবং এখন
অনেক এপ রয়েছে যা দিয়ে আপনি ফোন থেকেই ভিডিও এডিট করতে পারবেন। এর থেকে অনেক টাকা
আয় করতে পারবেন।
আরো জানুন: ইউটিউব চ্যানেল কিভাবে খুলবেন তার র্সম্পকে আলোচনা ?
কিন্তু কথা গুলি শুনে অনেক সহজ মনে হলেও আসলে কাজটা একটু কঠিন আছে কারন ইউটিউব রয়েছে
কিছু রুলস এন্ড রেগুলেশন যেটি আপনাকে মানতে হবে তা না হলে আপনার চ্যানেলটি ব্যান হয়ে যেতে
পারে। উদাহরণ সরুপ বলা যায় আপনি কোন এডাল্ট ভিডিও বা সুইসাইডাল টাইপের কোন ভিডিও
আপলোড করতে পারবেন না। আপনাকে শিক্ষামূলক বা কমেডিয়ান বা টিউটোরিয়াল বা মিউজিক
ভিডিও বা নাটক বা কোনো জিনিসের রিভিউ ইত্যাদি নিজের মত করে বানিয়ে আপলোড করতে
পারেন। তবে অন্য কারোর ভিডিও নিজের চ্যানেলে আপলোড করা যাবে না।
আরো জানুন: কিভাবে আয় করবেন YouTube থেকে ।
এরপর আপনার প্রবল মনের ইচ্ছা থাকতে হবে এবং একটি সুন্দর রুটিন করতে হবে । এবং যেই রুটিন
করবেন সেটা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে কাজ করলেই হবে। এরপর আসি আপনি কিভাবে টাকা ইনকাম
করতে পারবেন? এর জন্য আপনার চ্যানেল মাইটাইজ করতে হবে এবং অ্যাডসেন্স অ্যাড করতে হবে।
অ্যাডসেন্স অ্যাড করতে হলে মিনিমাম ১০০০ সাবস্ক্রাইবার থাকতে হবে। আর আপনার চ্যানেলের
সমস্ত ভিডিও মিলে লাস্ট ১ বছরে ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচ ভিউ থাকতে হবে।
আরো জানুন: ইউটিউব ভিডিও কিভাবে র্যাঙ্ক করবেন ?
এই কাজ যখন আপনার চ্যানেল পরিপূর্ণ করতে পারবে, তখনই আপনি অ্যাডসেন্সের জন্য অ্যাপলিকেশন
করতে পারবেন। অ্যাপলিকেশনের পর অ্যাডসেন্স কর্তৃপক্ষ আপনার চ্যানেলটি ভাল করে রিভিউ করবে
এবং আপনার চ্যানেলটি অ্যাপ্রুভ করে দেবে। আর অ্যাপ্রুভ হয়ে গেলেই আপনি আপনার ভিডিও গুলো
থেকে অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন।এরপর আস্তে আস্তে যখন আপনার ইউটিউব চ্যানেলটি গ্রো
করবে এবং মানিটাইজ করে যখন টাকা আসা শুরু করবে। তখন আপনি দামি ইন্সট্রুমেন্ট কিনবেন।
ফ্রিল্যান্সিং করে আয়:
আপনারা অনেকে হয়তো ভাবছেন ফ্রিল্যান্সিং আবার ব্যাবসা হলো কিভাবে? জি প্রিয় ভাইওবোনেরা
এইটাকে এক ধরনের ব্যাবসায় বলা যায়। কম পুঁজিতে ভাল ব্যাবসা এটি। কারন এই ফ্রিল্যান্সিং শিখতে
খুব বেশি টাকা প্রয়োজন হয় না। এবং আপনি রিকন্ডিশন্ড অনেক ভালো মানের ল্যাপটপ এখন পাওয়া
যায় যা খুবই অল্প টাকা দিয়ে কিনতে পারবেন এর সাথে স্ট্যাবেল একটি নেট হলেই আপনি খুব দ্রুত
ইনকাম করতে পারবেন। আর এখন ওয়াইফাই খুবই অল্প টাকাতে পাওয়া যায়।
আরো জানুন: OutsourceMyJob (OMJ) বাংলাদেশী সাইট থেকে আয় করুন কোন কষ্ট ছাড়ায়
তো মোটামুটি ২০০০০ থেকে ২৫০০০ টাকাতেই আপনি ভালো ভাবে কাজ শুরু করতে পারবেন। এবং
একবার কাজ শুরু করলে আপনি যদি ভালোভাবে রুটিন ওয়াইজ কাজ করেন তবে আপনাকে আর
পেছনে ফিরে তাকাতে হবে হবে । এবং আপনি যে ২০০০০/২৫০০০ টাকা পুঁজি ইনভেস্ট করেছেন তা
উঠতে ১ মাসের বেশি সময় লাগবে না কিন্তু এর জন্য আপনাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। ফ্রিল্যান্সিং
এর অনেক অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে যাতে প্রচুর প্রচুর কাজ রয়েছে যা করলে আপনি বেশ মোটা
অংকের টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
আরো জানুন: অনলাইন মার্কেটের ২০টি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং কাজ যা আপনার জানা প্রয়োজন।
তাছাড়া আপনার কাজের মান যদি ভালো হয় তবে বায়াররা আপনাকে হায়ার করবে কাজের জন্য এবং
ওয়েবসাইট এর তুলনায় অনেক বেশি টাকা ইনকাম করতে পারবেন। সবকিছুর প্রথমে হলো আপনাকে
ভালো ভাবে কাজ শিখতে হবে এবং কাজ করতে হবে কাজ না করে যদি আপনি ইনকাম করতে চান তবে
আপনার ধারনা ভুল এই জন্য অবশ্যই আপনাকে মন দিয়ে কাজ করতে হবে। তারসাথে একটি রুটিন
তৈরি করে সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে তাইলেই আপনি সফল হতে পারবেন
আরো জানুন: ফ্রিল্যান্সিং শিখতে হলে যা জানতে হবে জেনে রাখুন
আজ এই পর্যন্ত লেখা গুলো পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদেরকে শেয়ার করতে ভুলবেন না ।
আপনার সুচিন্তিত মতামত আমার একান্ত কাম্য। তাই এই বিষয়ে আপনার যদি কোন মতামত থেকে
থাকে তাহলে অবশ্যই নিচে কমেন্ট করে জানাবেন। আমি আনন্দের সহিত আপনার মতামত গুলো
পর্যালোচনা করে রেপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করবো।
ভাল থাকবেন।